রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন টমেটো চাষীরা। এ অবস্থায় খরচ না উঠায় অনেক কৃষক ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মাঠ থেকে কাঁচা টমেটো তিন টাকা ও পাকা টমেটো পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।কিন্তু উত্তোলিত টমেটো হাট-বাজার বা অস্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্রে নেয়ার খরচ ও শ্রমিকের মজুরি বাদ দিলে কৃষকের হাতে কিছুই থাকছে না। দাম না পাওয়ায় টমেটো এখন গরুর খাবারে পরিণত হয়েছে।
উপজেলার টমেটো চাষিরা জানিয়েছেন, শুরুর দিক লাভের মুখ দেখলেও মৌসুমের শেষের দিকে এসে উৎপাদন খরচ তুলতে কৃষকদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে আগামীতে এ অঞ্চলে সরকারিভাবে হিমাগার নির্মাণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে।
উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের টমেটো চাষী আহম্মদ শেখ বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার টমেটোর ফলন ভাল। কিন্তু দাম একেবারেই নেই। গত বছরেও তাদের লোকসানে পড়তে হয়েছিল রোগ-বালাইয়ের জন্য। আর এবারে দাম না পেয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকেরা টমেটোর আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
একই গ্রামের টমেটো চাষী হানিফ মোল্লা বলেন, ২২ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি।এখন পর্যন্ত টমেটো বিক্রি করেছি মাত্র ৭ হাজার টাকার । ২২ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩৫ হাজার টাকা। খরচের টাকা উঠছে না। এখন ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে যে টাকা পাচ্ছি তা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। তাই ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছি।
টমেটো ব্যবসায়ী আজাদ জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে টমেটোর প্রচুর আমদানি। সেজন্য চাহিদা কম।তাছাড়া গ্রাম থেকে কম দামে টমেটো কিনলেও পরিবহন খরচ অনেক।সে জন্য বর্তমানে টমেটো কেনা বন্ধ করে দিয়েছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলায় আগাম টমেটো চাষ হয়। প্রথম দিকে ভালো দাম পাওয়া যায়। এই সময় টমেটোর দাম কম থাকে। এখন সারা বাংলাদেশে টমেটো উঠতে শুরু করেছে তাই দাম কম।