দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষকরা বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে ও অধ্যক্ষের দুর্নীতির প্রতিবাদে অধ্যক্ষকে তার অফিসকক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। মঙ্গলবার বেলা ১টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ মনজুর আলমকে অবরুদ্ধ করে রাখে কলেজের শিক্ষকরা। পরে বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ এসে অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে।
জানা যায়, সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অভ্যন্তরীণ অডিটে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার ১৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া যায়। যার প্রতিবেদন ৮ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বোচাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিকট দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে অনার্স বিভাগের ৩৬ জন শিক্ষকসহ ৭০ জন শিক্ষক বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনা আদায়ের দাবিতে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে।
অনার্স ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক মো. জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, অধ্যক্ষ কলেজের প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তিনি কলেজের ফান্ড শূন্য করে অনার্স বিভাগের শিক্ষকদের বকেয়া বেতন দিতে গড়িমসি করছেন। তার ফলে তার অপসারণসহ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা করা হলো।
অধ্যক্ষ মনজুর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। তাই আমি অভ্যান্তরীণ অডিটে যে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে তা আমি পুনঃতদন্তের জন্য কলেজের সভাপতি বরাবরে আবেদন করেছি। এ ছাড়া তিনি বলেন, অর্নাসের শিক্ষকদের ২/১ মাসের বেতনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আমি যদি কলেজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে থাকি তাহলে আমি পদত্যাগ করব।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে উক্ত অধ্যক্ষ মনজুর আলমের বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট ৭টি অভিযোগের ভিত্তিতে চলমান পুনঃতদন্তে জেলা সমন্বিত কার্যালয় দিনাজপুর দুদকের উপপরিচালক এ এইচ আশিকুর রহমান ও সহকারী পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমানসহ একটি তদন্তদল সেতাবগঞ্জ কলেজে আসে। তদন্তকালে কলেজের অভ্যন্তরীন অডিট কমিটির সাতজন সদস্যকে গত ১০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে দুদকের জেলা কার্যালয় তলব করেন। এখানে অডিট কমিটি লিখিতভাবে উপপরিচালকে নিকট উক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার ১৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগসহ দালিলিক প্রমাণাদি দাখিল করেন।