বগুড়ার ধুনটে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে পরকীয়া প্রেমিকের মাধ্যমে স্বামী স্কুলশিক্ষক শহিদুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে শিক্ষিকা স্ত্রী সীমা আকতারকে (৩০) জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী টিএম আবদুল মতিন জানান, হত্যা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সীমা আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। পরকীয়া প্রেমিকসহ অপর দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। গ্রামবাসী তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এজাহার সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, সীমা আকতার ধুনট উপজেলার চালাপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান তালুকদারের মেয়ে ও চালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। গত ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের মৃত আজমল হোসেন খানের ছেলে পিরহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সাথে তার (সীমা) বিয়ে হয়।
তবে বিয়ের আগে থেকেই মথুরাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর খাদুলী গ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে খোরশেদ আলম বাবলুর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরও সীমা প্রেমিক খোরশেদ আলম বাবলুর সঙ্গে পরকীয়া অব্যাহত রাখেন।
প্রেমিক বাবলু এক পর্যায়ে সীমাকে বিয়ের চাপ দেন। সীমা রাজি হন এবং স্বামী শহিদুল ইসলামকে হত্যা করতে প্রেমিক বাবলুর সঙ্গে পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুসারে প্রেমিক খোরশেদ আলম বাবলু ও তার সহযোগী মথুরাপুর ইউনিয়নের প্রতাব খাদুলী গ্রামের সর্বহারা নেতা শফিউর রহমান জ্যোতির (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) ছেলে রুবেল আহমেদ ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে গলা কেটে শিক্ষক শহিদুলকে হত্যা করে। এ সময় সীমা তার স্বামীকে হত্যায় সহযোগিতা করেন।
পরদিন নিহতের ছোটভাই সাজেদুল ইসলাম সাজু ধুনট থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই সীমা আকতারকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে জামিনে ছাড়া পান। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি বগুড়া ক্যাম্পের বিশেষ পুলিশ সুপার কাউসার সিকদার ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর আদালতে স্ত্রী সীমা আকতার, প্রেমিক খোরশেদ আলম বাবলু ও তার সহযোগী রুবেল আহমেদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। বৃহস্পতিবার সীমা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন।
আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর আসামি বাবলু ও রুবেলকে পুলিশ আজও গ্রেফতার করতে পারেনি।
সিআইডি বগুড়া ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার হাসান শামীম ইকবাল জানান, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।