1. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. [email protected] : Maharaj Hossain : Maharaj Hossain
  3. [email protected] : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
ফিতরার নিয়ম, কত টাকা - Dainik Deshbani
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
কক্সবাজারে কাউন্সিলর হত্যা, নারীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার ধূমকেতুটি দেখা যাবে এক লাখ ৬০ হাজার বছর পর ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ফের শিক্ষার্থী সংযুক্তির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর গ্রেপ্তার ২০২৪ সালে হজ্জ পালন করেছে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ সব বিনিয়োগ সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার সরকার ও রাজনৈতিক দল ঠিক করবে নির্বাচন কখন হবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশি গ্রেফতার চাঁদাবাজি, অপহরণ সহ বিভিন্ন ঘটনায় পেশাদার অপরাধীরা তৎপর, উদ্বেগ দেশে ফিরছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমরানুল হক ৯ বছর পর

ফিতরার নিয়ম, কত টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪

জাকাতের মতো একটি আর্থিক ইবাদত হলো ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর। ‘সদকাতুল ফিতর’ দুটি আরবি শব্দ। সদকা মানে দান, আর ফিতর মানে রোজার সমাপন বা ঈদুল ফিতর। অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করা সদকাকেই সদকাতুল ফিতর বলা হয়।

রমজান মাসে রোজার ত্রুটি বিচ্যুতির কাফফারা স্বরূপ হলো ফিতরা। ঈদের নামাজ পড়ার আগেই অসহায়দের মাঝে তা আদায় করার সর্বোত্তম এবং সে নির্দেশনাই রয়েছে। ফিতরা আদায়ে অনেক বিষয় জানা জরুরি। নবীজী বলেছেন, ‘ঈদের আগে ফিতরা না দিলে রোজাদারের রোজা আসমান ও জমিনের মাঝে ঝুলে থাকে।’

আমাদের অনেকেরই সাদকাতুল ফিতর সম্পর্কে ধারণা নেই। আবার অনেকেই জানে না যে, কত টাকা থাকলে ফিতরা দিতে হয়? সাদকাতুল ফিতর দেবেন কারা? কার ওপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব? আসুন একনজরে কিছু বিষয় জেনে নিই-

 

ফিতরার নিয়ম

রাসুল (সা.)-এর যুগে মোট চারটি পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা হতো। খেজুর, কিশমিশ, যব ও পনির। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা পরিমাণ যব অথবা এক সা পরিমাণ খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির অথবা এক সা পরিমাণ কিশমিশ দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৫০৬)

খাদ্যবস্তুর পরিবর্তে সেগুলোর কোনো একটিকে মাপকাঠি ধরে তার মূল্য আদায় করা হয়।

বর্তমান বাজারদর হিসাবে যেহেতু গমের দামই সবচেয়ে কম, তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর আধা ‘সা’ গমকে মাপকাঠি ধরে ওই সময়ের বাজারদর হিসাবে তার মূল্য ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ ঘোষণা করা হয়। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো একটি দিয়ে এ ফিতরা আদায় করতে পারবেন।

হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, দুই পরিমাপে পাঁচ জিনিস দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। আর তা হলো: গম, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির। এগুলোর মধ্যে গমের পরিমাপ হলো অর্ধ সা আর বাকিগুলোর পরিমাপ এক সা। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো একটি দিয়ে এ ফিতরা আদায় করতে পারবেন। বর্তমান বাজারমূল্য হিসেবে তা তুলে ধরা হলো–

এক. গম/আটা : গম বা আটার পরিমাপ হবে অর্ধ সা। যা ৮০ তোলা সেরের মাপে ১ সের সাড়ে ১২ ছটাক। আর কেজির হিসাবে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম। তবে ন্যূনতম পূর্ণ ২ সের/কেজির মূল্য আদায় করা উত্তম ৷ যার বর্তমান বাজার মূল্য ১১৫ টাকা।

দুই. যব : যবের পরিমাপ হবে এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য- ৩৯৬ টাকা।

তিন. কিসমিস : এর পরিমাপও এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য- ১ হাজার ৬৫০ টাকা।

চার. খেজুর : এর পরিমাপ এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য- ১ হাজার ৬৫০ টাকা।

পাচঁ. পনির : পনিরের পরিমাপও এক সা। কেজির হিসাবে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। যার বর্তমান বাজার মূল্য- ২ হাজার ৬৪০ টাকা।

আবার কারও কাছে সোনা ও রূপা মিলে যে কোনো একটির নিসাব পরিমাণ টাকা থাকে তবে তার ওপর সাদাকাতুল ফিতর দেওয়া আবশ্যক। সোনা-রুপা ছাড়াও যদি কারও কাছে কিছু নগদ অর্থ, কিছু ব্যবহারের অতিরিক্ত মালামালসহ মিলিয়ে নেসাব পরিমাণ যে কোনো একটি সম্পদ থাকে তবে তাকে ফিতরা দিতে হবে। যদি কারও ঋণ থাকে, তবে তা পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদ হিসাব করতে হবে।

ফিতরা দেওয়া ফরজ কি না

নারী-পুরুষ, স্বাধীন-পরাধীন, শিশু-বৃদ্ধ, ছোট-বড় প্রত্যেক সমর্থ্য মুসলমানের জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। মাথাপিছু কত টাকা ফিতরা দিতে হবে, তা আগেই রাষ্ট্র কিংবা সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয়। নিয়ম হলো, ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই এই ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। তারপর ঈদগাহ কিংবা তার অভাবে বড় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।

সদকাতুল ফিতর নিজের পক্ষ থেকে এবং তার অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। নিজের স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে স্বামী ও বাবার জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়, তারা নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হলে নিজেরাই তাদেরটা আদায় করবে।

এ ব্যাপারে বাহরুর রায়েক কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে- সাদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা আদায় করা উত্তম। (আল বাহরুর রায়েক- ২/২৫১ পৃষ্ঠা)।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) স্বাধীন-দাস ছোট-বড় নারী-পুরুষ সব মুসলমানের জন্য গম বা খেজুরের এক সা (৩ কেজি ২৭০ গ্রাম) ফিতরা আবশ্যক করে দিয়েছেন এবং তা ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগেই আদায় করার আদেশ দিয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫০৩)

যার ওপর ওয়াজিব হবে তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নিজের অধীনস্থ অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান বা অবিবাহিত মেয়ের পক্ষ থেকে ফেতরা আদায় করা ওয়াজীব। সন্তানের নামে সম্পদ থাকলে সেখান থেকে আদায় করা যাবে। প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজীব নয়। কোনো এতিম শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়ে থাকলে তার পক্ষ থেকেও আদায় করতে হবে। স্ত্রী এবং বালেগ সন্তানগণ তারা তাদের ফিতরা নিজেরাই আদায় করবে।

স্বামী এবং পিতার ওপর তাদের ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়, অবশ্য দিয়ে দিলে আদায় হয়ে যাবে। নিজ পরিবারভুক্ত নয় এমন লোকের পক্ষ থেকে তার অনুমতি ছাড়া ফিতরা দিলে আদায় হবে না। কোনো ব্যাক্তির ওপর তার পিতা-মাতা এবং ছোট ভাই বোন ও নিকট আত্মীয়র পক্ষ হতে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়।

ফিতরা না দিলে কী হয়

বস্তুত এক মাস রোজা রাখতে গিয়ে আমাদের ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় যেসব ছোট ভুলত্রুটি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবেই সদকাতুল ফিতর। ক. রোজাদারের রোজায় যেসব দুর্বলতা ও ভুল হয়, তা থেকে পবিত্র হওয়া। খ. দরিদ্রদের প্রতি সদ্ব্যবহার। গ. ঈদুল ফিতরের দিনে দরিদ্রদের ভিক্ষা করা থেকে বিরত রাখা। ঘ. তারাবি ও রোজার মতো নেয়ামতে ধন্য করায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। ঙ. উদারতা ও সহমর্মিতার চর্চা করা।

ফিতরা কি খাবার দিয়েই দিতে হয়

ফিত্‌রা হিসেবে যে ধরনের খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার বিধান আছে- গম, ভুট্টা, যব, খেজুর, কিসমিস, পনির, আটা, চাল ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য। প্রতি একজনের ওপর এক সা‍ পরিমাণ ফিত্‌রা দেওয়া ফরয।

এর কারণ হচ্ছে, মুসলিমরা যেন নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোনো একটির মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে তা আদায় করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে সামর্থ্যবানরাও ব্যাপকভাবে সর্বনিম্ন দ্রব্যের মূল্য ধরে তা আদায় করে থাকে, যা বাস্তবিকই হতাশাজনক। কারণ, হাদিস শরিফে এসেছে, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)কে সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ করেন, ‘দাতার নিকট যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি, সেটাই উত্তম’। (বুখারি, হাদিস- ২৫১৮)।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৫ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব