প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে পরিচালিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) আরও আগে থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাতে শুরু করেছে।
সশস্ত্র সংগ্রামকে প্রত্যাখ্যান ও ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক সমন্বয়ের কাজ করতে রাজি হওয়ায় অনেক ফিলিস্তিনি পিএর ওপর অসন্তুষ্ট। জেনিন শরণার্থীশিবিরে তাদের সামরিক অভিযান এ ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
ইসরায়েল জেনিন ব্যাটালিয়নকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। কিন্তু জেনিনের অনেক বাসিন্দা এ ব্যাটালিয়নকে ইসরায়েলি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আরেক রূপ বলে মনে করেন।
এ বাসিন্দাদেরই একজন উম্মে আল-মোতাসিম। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা যখন আমাদের শিবিরে অভিযান চালাতে আসেন, পিএ যাঁদের সন্ত্রাসী বলছে, সেই তরুণেরাই তখন তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষে রুখে দাঁড়ান।’
জেনিন শরণার্থীশিবিরে পিএর অভিযানে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ বছরের এক শিশুও আছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জেনিনের বাসিন্দারা বলছেন, তাঁরা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযানের চেয়ে পিএর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানকে এখন বেশি ভয় পান। শাথা আল-শাব্বাগের মৃত্যু তাঁদের সেই ভয়কে আরও বাড়িয়েছে।
নিহত হওয়ার আগে শাথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনিনে পিএর অভিযানে ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরেছিলেন। গত বছর ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শিবিরে যে অভিযান চালিয়েছিল, তার ধ্বংস চিত্রও প্রকাশ করেছিলেন শাথা। তাঁর পোস্টে লড়াইয়ে মারা যাওয়া তরুণ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদেরও দেখা গেছে, যাঁদের মধ্যে তাঁর নিজের ভাইও ছিলেন।
শাথা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস। শাথার ভাই হামাসের একজন সদস্য ছিলেন বলে দাবি করেছে তারা।
হামাস শাথার নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘ঠান্ডা মাথায় খুন’ বলে বর্ণনা করেছে।
মুস্তফা বারগুতি, ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল প্যালেস্টিনিয়ান ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের প্রধান। জেনিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতকে তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম ফাতাহর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের দ্বন্দ্বের ফলাফল হিসেবে দেখছেন। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বেশির ভাগই এসেছেন ফাতাহ থেকে। অন্যদিকে, ২০০৭ সাল থেকে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস।
বারগুতি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের এটাও দেখতে হচ্ছে, তারা একে অন্যকে গুলি করছে; যখন ইসরায়েল তাদের সবাইকেই পিষে মারছে।