কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। তবে এ জামায়াত নেতার পাল্টা অভিযোগ, অধ্যক্ষ আওয়ামী লীগের ছিলেন। তিনি কলেজকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে গেছেন।
অভিযুক্ত জামায়াত নেতা বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরীর সহ-সভাপতি ইফতেখার আলম ভুঁইয়া। তিনি কুমিল্লা রূপসি বাংলা কলেজ সমিতির সভাপতি ও এমপিও ভুক্ত আবিদপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে ঘটনা ঘটে।
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার বেলা ১ টার দিকে ইফতেখার আলম ভুঁইয়া ও তার ভাই অ্যাডভোকেট কাউছার আলম ভূঁইয়াসহ ৪ থেকে ৫ জন ব্যক্তি কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরীর কক্ষে যান। ভেতরে বসে থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে ইফতেখার আলম বলছে একদম চুপ! কান ফাটাইয়া ফেলমু! বের হ! আর অধ্যক্ষ কে বলতে শুনা যায়, আরে মিয়া ধমক দিয়া কথা বলেন কেন! পরে প্রিন্সিপালের আশপাশের আরও দুই জন আঙুল তুলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তখন কলেজের কয়েকজন প্রভাষক তাদের চুপ থাকার রাখার চেষ্টা করলে তাদের দিকেও তেরে আসে এ জামায়াত নেতা। অধ্যক্ষ ও কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী সকলের নিরাপত্তার জন্য পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সদর দক্ষিণ থানায় ফোন দিলে পরে বিষয়টি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশকে জানায়। কলেজ পরিচালনা পর্ষদ আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের দারস্থ হবেন বলে জানান।
বিষয়টি নিয়ে সিটি কলেজের পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, কুমিল্লা সিটি কলেজ একটি বেসরকারি ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। ইফতেখার আলম ভুঁইয়া কলেজের কেউ নয়। তিনি আগের অধ্যক্ষ পদে ছিল। সে কলেজের সকল দেনা পাওনা আপস মীমাংসা মাধ্যমে স্টাম্পের মাধ্যমে বুঝে নেওয়ার পর কেন তিনি কলেজ দখল করতে আসে। এখন তিনি অন্যায়ভাবে কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষ স্যারকে এভাবে লাঞ্ছিত করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ নাদিমুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমি প্রতিদিনের ন্যায় কলেজে আমার কাজ করছিলাম। হঠাৎ আগের অধ্যক্ষ জামায়াত ইসলামীর কর্মী ইফতেখার সাহেবসহ কয়েকজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং আমাকে মারার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে আমি থানায় অবগত করেছি এবং কলেজ পর্ষদ আইনি প্রক্রিয়া নিবে বলেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইফতেখার আলম ভুঁইয়া বলেন, অধ্যক্ষ আওয়ামী লীগের। আমি কলেজকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে গেছি। এত বছর আওয়ামী লীগ এ কলেজ দখল করে রেখেছিল।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, সিটি কলেজের অধ্যক্ষের সাথে অপ্রীতিকর এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অধ্যক্ষ অভিযোগ দিলে আমরা নিশ্চিত অভিযোগ নিব।