কুমিল্লার চান্দিনায় বেতনের দাবিতে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীর প্রধান ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত ওই বিক্ষোভ করে তারা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
জানা যায়, চান্দিনা পৌরসভাধীন বেলাশহর এলাকায় অবস্থিত ‘ডেনিম’ নামের একটি তৈরি পোশাক ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা তাদের নির্ধারিত তারিখে বেতন না পেয়ে প্রতিবাদ করে। এসময় ওই ফ্যাক্টরীর কোনো এক কর্মচারী ওই শ্রমিকের সঙ্গে হাতাহাতি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে অন্তত দুই হাজার শ্রমিক।
শ্রমিক জিসান জানান, প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে আমাদের শ্রমিকদের বেতন ভাতা প্রদান করার কথা। কিন্তু গত মাসেও ২ দফায় বেতন পরিশোধ করে মালিকপক্ষ। চলতি মাসে এসেও একই অবস্থা। আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) এখনো আমাদের বেতন পরিশোধ করেননি।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সারা দেশে লকডাউন এবং রমজান শুরু। আমাদের পরিবারে এখনো বাজার খরচ করা হয়নি। এছাড়া আমাদের ওভারটাইমের টাকা পরিশোধ না করে মাসের শেষে ওভারটাইম বাদ দিয়ে দেন। প্রতিবাদ করলেই প্রতিবাদী শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়। এসব ঘটনার প্রতি মাসের।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ফ্যাক্টরীর প্রধান ফটক বন্ধ করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। টানা প্রায় ৫ ঘণ্টা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখার পর চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ, থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাসমউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে ‘ডেনিম’ ফ্যাক্টরীর পরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, ১২ টার মধ্যে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা যথাসময়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারিনি। আজ মঙ্গলবার শ্রমিকদের বেতনের ৭০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করে দিচ্ছি। আগামী ১৫ তারিখ বাকি ৩০ শতাংশ বেতন পরিশোধ করে দেব। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নিবাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ ও থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, আমরা অনেক চেষ্টার পর উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শান্ত হয়ে ৭০ শতাংশ বেতন গ্রহণ করে ফিরে যাচ্ছে।