1. [email protected] : দেশ রিপোর্ট : দেশ রিপোর্ট
  2. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  3. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

ভারতে টিকা ঘাটতি, বাংলাদেশও ভুগবে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১

পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারছে না ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার যতই আশ্বস্ত করুক না কেন সেখানের বিভিন্ন রাজ্যে ধীরে ধীরে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিচ্ছে। আর নিজস্ব চাহিদা মেটাতে কিছুদিন আগেই বাইরের দেশে টিকা রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। এতে ভুগতে পারে বাংলাদেশও। এই পরিস্থিতির উন্নতি কবে হবে তা নির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ভারতে টিকা উৎপাদনের ঘাটতি নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। দিল্লির উপকন্ঠে বাস করা এক সমাজবিজ্ঞানী ডক্টর কুমার বলেছেন, আমি আশেপাশের তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে কল করেছিলাম। সবাই বলেছে, তাদের কাছে থাকা ডোজ শেষ। হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি ৫০ শয্যার হাসপাতালও ছিল। সেখানের এক কর্মচারী বলেছেন, আমাদের টিকার স্টক একদম শূন্য। আমরা আর টিকা প্রদানের বুকিং নিচ্ছি না।

সবচেয়ে বিপদে আছে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল রাজ্য মহারাষ্ট্র। সেদেশে নতুনভাবে ভাইরাসে আক্রান্তদের অর্ধেকের বেশি এই রাজ্যের বাসিন্দা। সংক্রমণ বেড়ে চলায় সেখানে টিকাদান কর্মসূচি কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

মহারাষ্ট্রের সরকার শুক্রবার জানিয়েছে, এ মুহূর্তে তাদের হাতে ১৫ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে যা দিয়ে তিন দিন পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়া যাবে। রাজ্যের রাজধানী মুম্বাইয়ে এবং কোলাপুর, সাংলি ও সাতারা জেলার অনেক এলাকায় টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপ সাংবাদিকদের বলেন, “তিন দিনের মধ্যে টিকার চালান না এলে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে আমরা বাধ্য হব।”

তবে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বলেছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে ভীত হওয়ার কোনো ভিত্তি নেই। চার কোটিরও বেশি ডোজ স্টকে আছে বা ডেলিভারি দেওয়ার কাছাকাছি আছে। বিবিসি মন্তব্য করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ দাবি সম্ভবত সত্য নয়। তারা অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অমেন সি কুরিয়ানের বরাত দিয়ে বলেছে, ভ্যাকসিন সংকট কিছু রাজ্যে আসলেই সত্যি বলে মনে হচ্ছে। আরো বলা হয়েছে, এই সংকট তৈরির পেছনের কারণ সম্ভবত দাবিকৃত টিকা তৈরির সক্ষমতা ও বাস্তবে উৎপাদিত টিকার পরিমাণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা।

ভারত ১৬ জানুয়ারি বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে এবং তাদের লক্ষ্য জুলাইয়ের মধ্যে ২৫ কোটি জনগণকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া। এ পর্যন্ত তারা নিজ জনগোষ্ঠীকে ৯ কোটি ডোজ টিকা দিতে পেরেছে, যার মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড এবং ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক উদ্ভাবিত কোভ্যাক্সিন- দুটোই রয়েছে। সেদেশে দিনে গড়ে ৩০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে টিকার চালান সময়মতো সরবরাহ করতে না পারায় কিছুদিন আগে কোভিশিল্ড উৎপাদনে চুক্তিবদ্ধ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে (এসআইআই) আইনি নোটিস পাঠায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

ফার্মটির প্রধান আদর পুনাওয়ালা এই সপ্তাহে বলেছেন, আমাদের উৎপাদন সক্ষমতার ওপর চাপ পড়ছে। প্রত্যেক ভারতীয়কে টিকা সরবরাহ করা থেকে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তারা প্রতিমাসে সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি ডোজ ভারতে সরবরাহ করছে। এ বছরের শুরুতে ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু করার পর থেকে একই পরিমাণ ভ্যাকসিন রফতানিও করা হয়েছে। জানা গেছে, ভারত থেকে ভ্যাকসিন গেছে বিশ্বের ৮৫টি দেশে।

গত জানুয়ারিতে তারা বিবিসিকে বলেছিল, তারা প্রতিমাসের উৎপাদন সক্ষমতা ১০০ মিলিয়ন ডোজ পর্যন্ত বাড়াবে। এখন তারা বলছে জুনের আগে তা করা সম্ভব নয়। কারণ জানুয়ারিতে লাগা এক আগুনে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ফ্যাসিলিটির অংশ মেরামত করতে সময় লেগেছে।

এছাড়া উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে অর্থনৈতিক সমস্যায়ও আছে সেরাম ইন্সটিটিউট। সক্ষমতা বাড়াতে সরকার বা ব্যাংকের কাছে অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ খুঁজছেন পুনাওয়ালা। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে মাত্র দুই ডলারে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন বিক্রি করছে। এই দর প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুনাওয়ালা।

বিবিসি উল্লেখ করেছে, স্পষ্টতই ভারতের ভ্যাকসিনের ঘাটতি বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে। পুনাওয়ালা বলেছেন, আমরা তাদের বলেছি যে ভারতের অবস্থা এতো গুরুতর যে আমাদের রফতানির তুলনায় দেশের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব