ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে আজ শুক্রবার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি তামিম ইকবালদের জন্য ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই। তবে ৩১৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৫৪ রানেই গুটিয়ে গেছে টাইগারদের ইনিংস। ১৬৪ রানের বিশাল জয়ে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে কিউইরা।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচ হারায় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয়টা অধরাই থাকল বাংলাদেশে। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দলটিকে হারাতে পারেনি টাইগাররা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তিনটিতেই হেরে সেই আক্ষেপটা আরও বাড়ল। কদিন পর থেকে কিউইদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। জয়ের আক্ষেপ ঘুচাতে এখন সেদিকেই মনযোগ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত ডেভন কনওয়ে এবং ড্র্যায়েল মিচেলের শতকে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রানের বিশাল পুঁজি সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ৩১৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভার মেডেন দেন অধিনায়ক তামিম। এরপর তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে ম্যাট হেনরির শিকার হয়ে ফেরেন তামিম। দলীয় ১০ রান এবং ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।
পঞ্চম ওভারে তামিমের দেখানো পথেই হাঁটলেন সৌম্য সরকার। টপ অর্ডার আরও একবার ব্যর্থ নিউজিল্যান্ড সিরিজে। ম্যাট হেনরির করে তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ট্রেন্ট বোল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য। এর আগে নামের পাশে কেবল একটি রানই যোগ করতে পারেন তিনি। সৌম্য ফেরেন দলীয় ১৮ রানের মাথায়।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে মিলে কিছুটা চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস। তবে ব্যক্তিগত ২১ রানে আর দলীয় ২৬ রানের মাথায় ম্যাট হেনরির তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন তিনিও। তাতেই টাইগারদের তৃতীয় উইকেটের পতন ইনিংসের ৭ম ওভারেই।
লিটন ফেরার পর মুশফিকের সঙ্গে ধীর গতিতে ইনিংস মেরামতের কাজে মগ্ন হন মিঠুন। একের পর এক ডট বল খেলতে থাকেন আর চাপ বাড়াতে থাকেন। অবশেষে সেই চাপের শেষটা আসে ইনিংসের ১৮তম ওভারের শেষ বলে। জেমিসনের বলে স্যান্টনারের হাতে ৩৯ বলে ৬ রান করে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন মিঠুন। তাতেই মাত্র ৪৮ রানে চার ব্যাটসম্যান হারায় বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মিলে দলকে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে ২৯ রানের জুটি গড়েন। ২৪তম ওভার জিমি নিশামের করা প্রথম বলটাই আসে শর্ট, মুশফিক তার প্রিয় পুল শট খেলতে গিয়ে নিশামেরই তালুবন্দি হন। দলীয় ৭৭ রান ব্যক্তিগত ৪৪ বলে ২১ রানে মুশফিক ফেরেন ড্রেসিংরুমে। তারপর মেহেদি হাসান মিরাজ নিজের দ্বিতীয় বলে কনওয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে কোনো রান না করেই ফেরেন।
মেহেদি হাসান মিরাজ ফেরার পর স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ হতেই নিশামের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন তরুণ মেহেদি হাসান (৩)। এরপর তাসকিন আহমেদ ২৪ বলে ৯ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। আর যেন টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের জানান দেন এভাবেই প্রতিরোধ গড়তে হয়। তবে রিয়াদের সঙ্গে ২০ রানের জুটি ভাঙে ম্যাট হেনরির ৪র্থ শিকার হয়ে তাসকিন ফিরলে।
তাসকিনের পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হন পেসার রুবেল। হারের ব্যবধান কতো কমানো যায় সেই লক্ষ্যেই ক্রিজে টিকে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। রুবেল ও শেষ ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজুরের আউটের পর ১৫৪ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৫ উইকেট শিকার করেছেন জিমি নিশাম। ৪টি পেয়েছেন ম্যাট হেনরি। একটি উইকেট শিকার করেছেন কাইল জেমিসন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
নিউজিল্যান্ড: ৩১৮/৬, নির্ধারিত ৫০ ওভার, (মার্টিন গাপটিল ২৬, হেনরি নিকোলস ১৮, ডেভন কনওয়ে ১২৬, রস টেইলর ৭, টম লাথাম ১৮, ড্রায়েল মার্টিন ১০০*, জেমস নিশাম ৪, স্যান্টনার ৩* ); (মোস্তাফিজুর রহমান ১০-০-৮৭-১, তাসকিন আহমেদ ১০-১-৫২-১, রুবেল হোসেন ১০-১-৭০-৩, মেহেদি হাসান ৭-০-৪৬-০, মিরাজ ৫-০-২৩-০, সৌম্য সরকার ৮-০-৩৭-১)
বাংলাদেশ: ১৫৪/১০, ৪২.২ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৭৬, লিটন ২১, মুশফিক ২১; ম্যাট হেনরি ২৭/৪, জেমিসন ৩০/১, নিশাম ২৭/৫)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ১৬৪ রানে জয়ী।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: ডেভন কনওয়ে