নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে এক রাতের ব্যবধানে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। মঙ্গলবার সংষর্ষে হতাহতের ঘটনার পর শুক্রবার সকালে প্রথমবারের মতো পৌর ভবন থেকে বেরিয়ে ২০-২৫ জন অনুসারী নিয়ে পৌর এলাকায় শোডাউন করেছেন কাদের মির্জা। এরপর তিনি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
অনেকেই বলছেন, বৃহস্পতিবার তার নেতাকর্মীদের মধ্যেও কাদের মির্জা গ্রেফতার হতে পারেন বলে গুঞ্জন ছিল। স্ত্রী ও আইনজীবী পৌর ভবনে গিয়ে কাদের মির্জার সঙ্গে দেখা করেও এসেছিলেন। গ্রেফতার হতে পারেন বলে তিনিও মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন।
কিন্তু এক রাতের ব্যবধানে পাল্টে গেছে চিত্র। কাদের মির্জার বিরুদ্ধে কোনো মামলা রেকর্ড না করা এবং বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা নেয়ার নেপথ্যে কী আছে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে।
এলাকার অনেকেই মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত ভাই হয়তো ভাইয়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
বসুরহাটে আওয়ামী লীগের বিবদমান দু’গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো কোম্পানীগঞ্জে। ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। এই ভীতিকর অবস্থা থেকে মুক্তি চান এখানকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাদের মির্জার অনুসারীদের পক্ষ থেকে দুটি ও পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ২৯ জন।
আর বাদলের অনুসারীরা দুটি এজাহার থানায় জমা দিলেও তা মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ। তবে মামলা রেকর্ড না করার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে হত্যা মামলার এজাহার থেকে কাদের মির্জার নাম বাদ দিতে বাদীকে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় শুক্রবার সকালে পৌর ভবন থেকে বেরিয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাদের মির্জার শোডাউন পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। আর কোম্পানীগঞ্জ অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন বাদলের অনুসারী ও কাদের মির্জার ভাগিনা মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু।
মিজানুর রহমান বাদলকে শুক্রবার আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্যদিকে সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের ‘সাঁড়াশি’ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হলেও ৭টি ককটেল ও বেশকিছু লাঠিসোটা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার এড়াতে দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।