করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বুধবার বিকাল ৫টায় তিনি টিকা গ্রহণ করবেন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির প্রেস সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন বিষয়টি জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহেনা করোনার টিকা নেন।
গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো করোনার টিকা দেওয়া হয়। পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। দেশব্যাপী ১০০৫টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই অনেক বিশেষ ব্যক্তি এবং মন্ত্রীরাও টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। এটি বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।
করোনা মহামারিতে যখন সারা বিশ্ব বিপর্যস্ত, তখন এর প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করতে নেমে পড়ে। সফলও হয়েছে কয়েকটি। এরমধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে কোভ্যাক্স, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং জনসনের টিকা অন্যতম।
এরমধ্যেই যাদের ভ্যাকসিন আগে আসবে- সেই ভ্যাকসিনটাই যেন দ্রুত বাংলাদেশ পায়, সেজন্য সরকার অগ্রিম টাকা দিয়ে চুক্তি করে রাখে।যার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ কোটি ডোজ করোনার টিকার জন্য গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাঠানোর কথা। দেশে টিকার প্রথম চালান আসে গত ২৫ জানুয়ারি।
এর আগে উপহার হিসাবে বাংলাদেশে পাঠানো ভারত সরকারের ২০ লাখ টিকা পৌঁছায় গত ২১ জানুয়ারি। এ টিকা পাওয়ার পর সরকার ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম টিকা প্রয়োগ শুরু করে। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণটিকাদান কার্যক্রম। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলছে।
এরপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে টিকার দ্বিতীয় চালান ঢাকায় আসে। এই চালানে ২০ লাখ ডোজ আসে। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে বলা হয়েছে। সারা দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি একযোগে টিকা দেওয়া শুরু হয়। সেই হিসাবে আগামী ৭ এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে।