করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেয়া হবে- এমন গুজবে শনি ও রোববার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল কুড়িগ্রাম শহরে। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়।
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রত্যয়ন নিতে শহরের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় ছিল উল্লেখ করার মতো। দূর-দূরান্ত থেকে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা আবেদনের জন্য শহরে আসেন। অতিরিক্ত মানুষের চাপে শহরে লেগে যায় যানজট। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
কয়েকজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান জানান, গত বছরের মতো এ বছরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ অনুদানের জন্য আবেদন চাওয়া হয়েছে। এতে দূরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন। দুস্থ, প্রতিবন্ধী, গরিব ও অনগ্রসর ছাত্রছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
সংস্কার, আসবাবপত্র, খেলার সামগ্রী এবং পাঠাগার উন্নয়নের জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। ৭ মার্চ আবেদনের শেষ সময়।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, করোনাকালীন স্টুডেন্ট ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করার কথা শুনে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে অনলাইনে আবেদনের জন্য ভিড় করছেন। কিন্তু নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ঢোকাই যাচ্ছে না।
এছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন জানায়, ১০ হাজার টাকা ভাতা দেয়ার কথা শুনে তার মাসহ এসেছেন।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া জানান, প্রত্যয়ন নিতে গণিত বিভাগের ক্লার্ক ৫০ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা ১০০-২০০ টাকা করে নিয়েছেন।
অভিভাবক বজলুর রশিদ জানান, সবার মুখে মুখে শুনে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন আবেদন করতে। কিন্তু সার্ভারে ঢোকাই যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ জানান, এ ধরনের চিঠি গত বছরও এসেছিল এবং সীমিতসংখ্যক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনুদান পেয়েছেন। কিন্তু গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে এ বছর ধনী-দরিদ্র সব শিক্ষার্থী প্রত্যয়ন নিয়ে আবেদন করার জন্য ভিড় করছেন।
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, যে চিঠি এসেছে তাতে সব শিক্ষার্থীর আবেদনের সুযোগ নেই; কিন্তু গুজবের কারণে সবাই প্রত্যয়নের জন্য ভিড় করছেন।
কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামসুল আলম জানান, তাদের কাছে করোনার জন্য কোনো অনুদানের চিঠি আসেনি। একটি মহল গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে স্বার্থ হাসিল করতে চায় বলে তার মনে হয়।