গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে। বলতে গেলে ভাইরাল। ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছেন ভিডিওতে দেখা একজন পুলিশ সদস্য।
অনেকের মতে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একেবারে বিপরীত চিত্র দেখা গেল ভিডিওতে।
ভিডিও দেখা গেছে, ষাটোর্ধ এক রিকশাওয়ালা তার বাহন নিয়ে থামলেন এক পুলিশ সদস্যের সামনে। যিনি রাস্তার যানজট নিরসনের দায়িত্বে ছিলেন। এ সময় ওই রিকশাওয়ালাকে স্যালুট দিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলেন পুলিশ সদস্য। এমন সম্মান দেখানের পর পকেট থেকে টাকা বের করে রিকসাওয়ালার হাতে গুঁজে দেন তিনি। পুলিশ সদস্যের এই মহানুভবতায় যারপরনাই উচ্ছ্বসিত নেটদুনিয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী সদরের ভেলানগর স্টেডিয়ামের সামনে। আর ওই কনস্টেবলের নাম সোহাগ হোসেন (২৮)। তিনি নরসিংদী পুলিশ লাইনে কর্তব্যরত।
ঘটনায় সম্পৃক্ত পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেদিন বিকেলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল সোহাগ। এদিন ষাটোর্ধ ওই রিকশাওয়ালা তার রিকশা থামিয়ে কনস্টেবল সোহাগকে বলেন, তার প্যাসেঞ্জার তাকে ভাড়া না দিয়ে পালিয়েছে। এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর পারিশ্রমিক না পেয়ে তিনি খালি হাতে ফিরে এসেছেন। দুপুরে খাওয়া হয়নি তার। তার পকেট খালি। এই পারিশ্রমিকটি পেলে খাবার খাওয়ার টাকা জুটত কপালে। রিকশাওয়ালার করুণ এই কাহিনী শুনে মন গলে যায় কনস্টেবল সোহাগের। সোহাগ তাকে টাকা দেন এবং একটি খাবারে দোকান দেখিয়ে দেন। পাশেই থাকা একটি হার্ডওয়ারের দোকানে লাগানো সিসিটিভিতে ঘটনাটি রেকর্ড হয়। আর সেখান থেকে ভিডিওটি সংগ্রহ করে স্বপন শেখ নামে এক পলিটেকনিক শিক্ষার্থী ফেসবুকে আপলোড করেন। পরে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সদস্য সোহাগ হোসেন বলেন, গত এক বছর ধরে নরসিংদী পুলিশ লাইন্স এ দায়িত্ব পালন করে আসছি। মাঝে মধ্যে ট্রাফিকের সংকট হলে এক্সট্রা ফোর্স হিসেবে তিনি ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন। সেদিন আমার কাছে নাশতা খাবার টাকা চেয়েছিলেন ওই রিকশাওয়ালা চাচা। তার পরিস্থিতি দেখে খুব মায়া লেগেছিল আমার। তাই ওনাকে হাত উঠিয়ে সালাম দেই। এই বয়সেও তিনি কাজ করে উপার্যন করছেন দেখে তাকে এই সম্মান দিয়েছি। তিনি আমার বাবার মতোন। হয়ত আমার মতো উপার্যনক্ষম ছেলে নাই উনার।