আদালত অবমাননার অভিযোগে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে শোকজ করেছেন হাইকোর্ট। কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না সে বিষয়ে ২ সপ্তাহের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কেরানীগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা মামলার আসামি শিল্প মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিয়ে ৭ দিনের মধ্যে আদালতকে লিখিতভাবে জানাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ করার কারণে আদালতের নির্দেশে একবার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর কেরানীগঞ্জ এলাকায় কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে পুনরায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় এই শোকজ করা হয়েছে।
বুড়িগঙ্গা নদী দূষণরোধে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট মামলায় এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম।
হাইকোর্ট এর আগে বিভিন্ন সময়ে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণকারী শিল্প কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, ওইসব প্রতিষ্ঠানে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি ছাড়াই কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে পুনরায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেন রিট আবেদনকারীপক্ষ।
এ আইনজীবী আদালতে বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কেরানীগঞ্জ থানায় গত পহেলা ফেব্রুয়ারি পরিবেশ আইনে ৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না। অপরাধীরা নদী দূষণ করেও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এ অবস্থায় আদালত আদেশ দেন।
এইচআরপিবি’র করা রিট মামলায় হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এছাড়া নদীর পানি যাতে দূষিত না হয় সেজন্য সব ধরনের বর্জ্য ফেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। যা নদীর পানিকে দূষিত করছে। বিষয়টি এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে আদালতের নজরে আনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সময়ে সময়ে আদেশ দিচ্ছেন।