বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মালেয়শিয়া প্রবাসির ছেলে তাওহীদ সরকারকে (৫) ঘরের ভেতর বঁটি দিয়ে গলাকেটে করে হত্যা করেছে তার বড় ভাই সজিব সরকার (৭)। ধারালো বঁটি দিয়ে খেলতে গিয়ে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের গলা কেটে ফেলে। এ সময় ওই বাড়িতে দুই ভাই ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। আজ রবিবার বিকেলে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা ধুনট থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। নিহত তাওহীদ উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর সরকারের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, জীবিকার তাগিদে আব্দুল গফুর সরকার প্রায় আড়াই বছর ধরে মালেয়শিয়া অবস্থান করছেন। তাওহীদ বাড়িতে তার মা ও দাদা-দাদির সঙ্গে থাকত। গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে তাওহীদের মা দুলালী খাতুন দুই ছেলে সজিব ও তাওহীদকে বাড়িতে রেখে তার শাশুড়ি গোলাপী খাতুনের সঙ্গে বাড়ির পাশে ভুট্টাখেতে ঘাস কাটতে যান। এরই মধ্যে সজিব ও তাওহীদ খেলছিল। এর এক পর্যায়ে সজিব ধারালো বঁটি দিয়ে তাওহীদের গলা কেটে ফেলে।
কিছুক্ষন পর ঘাস নিয়ে দুলালী খাতুন বাড়ি ফিরে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখেন মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে তার ছেলে তাওহীদ, তার গলা কাটা। এ সময় তার চিৎকার শুনে দেবর সোলাইমান আলী ঘটনাস্থল থেকে তাওহীদকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানেই তাওহীদ মারা যায়।
এর পর পুলিশ এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার রাতেই নিহত শিশুটির মা, সৎবোন ও চাচা সহ ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আটককৃতরা হলো, নিহত তাওহীদের মা দুলালী খাতুন (২৮), সৎবোন সুরভী খাতুন (১৪), চাচা সোলায়মান আলী (৪০) ও প্রতিবেশী গোলাম হোসেন (৩৫)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে সজিব জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে সজিবকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সজিব হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রকাশ করে। এসময় ধুনট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (প্রবেশন কর্মকর্তা) আব্দুল্লাহ আল কাফির উপস্থিতে সজিবের জবান বন্দী রেকর্ড করা হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বলেন, আইন অনুযায়ী ৮ বছরের কম বয়সী শিশুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহনের সুযোগ নেই। একারণে সজিবকে প্রবেশন কর্মকর্তার (সমাজসেবা কর্মকর্তা) নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
ধুনট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল কাফি বলেন, আইনী প্রক্রিয়া শেষে সজিব সরকারকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।