শিক্ষার্থীরা যাতে কোন খাবার খেতে না পারে সে জন্য গেরুয়া গ্রামের সকল খাবারের দোকান জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। নতুন করে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে গেরুয়া গ্রামে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা কালের কণ্ঠের কাছে এ অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, ‘গেরুয়ার স্থানীয়রা সব খাবারের দোকান জোর করে বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া যে সকল খাবারের রুম সার্ভিস ছিল তাদেরও নিষেধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা।’
এ বিষয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গেরুয়ার আজকে সকালের যে পরিস্থিতি দেখলাম তা খুব ভীতিকর। সব পোলাপাইন গেরুয়ার সব ধরনের দোকান জোর করে বন্ধ করে দিয়েছে। যারা রুমে রুমে খাবার দিতো তাদের খাবার দিতে না করছে। বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত প্রকৃত ঘটনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে সব হলগুলো খুলে দিয়ে রানিং স্টুডেন্টদের হলে ফিরিয়ে নেওয়া, এবং সাবেক যারা আছি তাদের নিরাপত্তা দিয়ে ইসলামনগর, আমবাগানে শিফট করা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এর বিকল্প আছে বলে মনে করছি না। তারা বলছে গেরুয়ায কোন স্টুডেন্ট থাকবে না।’
স্নাতকোত্তর অপর এক শিক্ষার্থী তরিক ফরহাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ভয়ে বের হচ্ছি না। চুপ করে দোকানের পিছ দিয়ে ঢুকে খাবার নিতাম। এখন সেটাও বন্ধ। দোকানিরা বললো স্থানীয়রা এসে জোর করে দোকান বন্ধ করে দিয়েছে।’
এদিকে আজ দুপুর সারে ১২টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবি গুলো হল- দ্রুত এই পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার বিচার ও রেকর্ড দেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করতে হবে, গেরুয়াতে অবস্থিত শিক্ষার্থীদের পুলিশি হেফাজতে ক্যাম্পাসে আনতে হবে, নিরাপত্তার স্বার্থে হল খুলে দিতে হবে, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সকল ক্ষতিপূরণ ব্যয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে, ক্যাম্পাস ও আশেপাশের সকল শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের নিতে হবে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে তার দায়ভার ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। এর দায় শিক্ষার্থীর নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও উপাচার্যবিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে।
গতরাতে প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান কালের কণ্ঠরে বলেন, ‘আজ পবিত্র রাত হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে হলে থাকা নিয়ে আর কথা বলবো না। সরকারকে সব জানানো হয়েছে। আজ শিক্ষামন্ত্রী জানালে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।’
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।