এক মাস হলো নিখোঁজ রয়েছেন মুক্তার মৃধা (৪০)। বহুদিন বাবা বাড়ি না ফেরায় দিশেহারা হয়েছে পড়েছে সন্তানরা। স্বামীর খোঁজে তার ছবি নিয়ে তিন ছেলেসহ পথে পথে ঘুরছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া।
শনিবার নিখোঁজ মুক্তারের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন জানান, প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
তার স্বামীর দেশের বাড়ি পাবনা বেড়া থানার খানপুরার মধ্যপাড়াতে। সংসারের অভাব ঘোচাতে জীবিকার টানেই তারা বহু বছর আগে কালীগঞ্জে এসেছেন। স্বামী নিখোঁজের পর দেশের বাড়িতেও অনেকবার খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু সন্ধান মেলেনি।
এরপর গত ২৬ জানুয়ারি থানাতে জিডি করলে পুলিশও অদ্যাবধি তার খোঁজ পায়নি। সেই থেকেই নিখোঁজ বাবাকে ফিরে পেতে মাকে সঙ্গে নিয়েই থানা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিসহ সাংবাদিকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে চোখের পানি ফেলছেন সন্তানরা।
রাজিয়া খাতুন জানান, স্বামী একজন ডাব বিক্রেতা। কালীগঞ্জ শহরেই ডাব বিক্রি করতেন। কারও সঙ্গে তার কোনো শত্রুতা নেই। তারা কালীগঞ্জ শহরের ঢাকালেপাড়াতে আরজুলের বাসাতে ভাড়া থাকেন।
তার তিনটি পুত্র সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে রাহাত (১৭) বাবার সঙ্গে ডাব বিক্রির কাজে সহযোগিতা করত।
মেজ ছেলে রাকিব (১৬) সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ বিদ্যালয়ের থেকে এবারের এসএসসি পরিক্ষার্থী এবং ছোট ছেলে রিফাত (১১) একই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী মুক্তারের বড় ছেলে রাহাত জানায়, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান তারা। পরের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। অভাবের সংসারে যোগান দিতেই লেখাপড়া বন্ধ করে সে বাবার সঙ্গেই শহরের ফাতেমা ক্লিনিকের সামনে ডাব বিক্রির কাজে সহযোগিতা করতো।
এখন সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী বাবা নিখোঁজের পর তাদের সংসারে নেমে এসেছে অন্ধকারের ছায়া। সেই সঙ্গে তার ছোট দুই ভায়ের লেখাপড়াও যেন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।