1. [email protected] : দেশ রিপোর্ট : দেশ রিপোর্ট
  2. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  3. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন

বেকারদের ভাতা দিবে ডি-মা

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

প্রতিদিন হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। যার ভোগান্তির কোন শেষ নেই। দেশে বাড়ছে হাজারো বেকার। এরমধ্যে কেউ পুঁজির জন্য করতে পারছেন না ব্যবসা। আবার কেউ চাকরির জন্য ঘুরছে। চাকরি না পাওয়ার হতাশায় কেউ যেমন ভোগেন মানুষিক অসস্তিতে আবার কেউ বেছে নেয় আত্মহত্যার মত জঘন্য পথ। এদিকে রাজধানী ঢাকার যানজটে অতিষ্ট মানুষ। এর মুক্তি চান নগরবাসী। এমন প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল ফ্ল্যাটফর্ম (ডিমা) বানিয়েছেন ইমতিয়াজ উদ্দিন আজাদ নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা। এ মোবাইল এ্যাপটি দিবে বহুমুখী সেবা ও নানা সমস্যার সমাধান।

ডি-মা: একজন মা যেমন তার সন্তানের সর্বোচ্চ মঙ্গলের জন্য চেষ্টা করে থাকেন ডি-মা বা ডিজিটাল মা এপস্টিও সেই ভূমিকা পালন করবে। এর ব্যবহারকারী হবে দেশের সাধারণ মানুষ। অন্যান্য এপস্রে মতই সহজেই ব্যবহার করা যাবে এই এপস্টি। শুধু বেকার ভাতা বা কর্মসংস্থান সৃষ্টিই নয়, এই এ্যাপটি দিবে বহুমুখী সেবা ও নানা সমস্যার সমাধান। যেমন: যানজট নিরসন, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি।

ডি-মার উদ্দেশ্য: ক্ষুদ্র বিনিয়োগে সম্মিলিত উদ্যোগে ব্যাপক শিল্প, কল-কারখানা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা এবং বেকারত্ব দূরীকরণে কাজ করা। বেকারদের বেকার ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা। ব্যবসায়িক লেনদেন ও ধার-দেনা নেওয়া বা দেওয়ার ব্যবস্থাকে ঝুঁকি মুক্ত করা। বিদেশি কোম্পানিগুলো বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞাপনের বিকল্প ব্যবস্থা করা। ক্ষুধার্তকে খাদ্য সরবরাহ করা।

যেভাবে কাজ করবে ডি-মা: ডি-মা এপস্ যে কেউ তাদের ভাল একটি বিজনেস আইডিয়া শেয়ার করতে পারবে।

যেমন: আপনার এলাকায় একটি কারখানা দিলে খুব ভালো চলবে, এর জন্য খরচ হতে পারে ৫০ লক্ষ টাকা। অথচ আপনার পকেটে আছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। আপনার এলাকা এবং এর আশেপাশের সবার কাছে এপসের মাধ্যমে বিষয়টির একটি নোটিফিকেশন মোবাইলে যাবে। যাদের এই কারখানা তৈরিতে আগ্রহ থাকবে তারা এপস্রে মাধ্যমে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং কত টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে তা উল্লেখ করবে। যেমন কেউ ১০,০০০/- কেউ ৫০,০০০/- কেউ এক লক্ষ ২ লক্ষ এভাবে ৫০ লক্ষ টাকা হয়ে গেলে ডি-মা কর্তৃপক্ষ সবাইকে ডেকে অর্থ সংগ্রহ করে কারখানাটি তৈরি করে দিবে।

এতে করে যে কেউ সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে একটি কারখানার মালিক হয়ে যেতে পারে!

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ডি-মা: ডি-মা এপস্রে মাধ্যমে একদিকে প্রচুর পরিমাণে বিজনেস আইডিয়া আসতে থাকবে আর অন্যদিকে সেগুলো তৈরি হতে থাকবে। এখানে বিজনেস আইডিয়া হিসেবে ক্ষুদ্র মুদির দোকান থেকে শুরু করে বৃহৎ কল-কারখানা ইন্ডাস্ট্রি পর্যন্ত হতে পারে।

এভাবে ব্যাপক কলকারখানা প্রতিষ্ঠিত হতে থাকলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হবে। ফলে বেকার সমস্যা অনেকটাই দূর হতে যাবে। উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে থাকবে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

এখানে যে কেউ সামান্য টাকার বিনিময় যেমন একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক হচ্ছে অন্যদিকে সেখানে তার একটি ভালো কর্মসংস্থানও হচ্ছে।

ব্যবসা সুদৃঢ় করতে ডি-মা: আমাদের দেশে সাধারণত যৌথভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে গেলে উভয়ের মধ্যে মতানৈক্য থাকে এবং একে অপরের প্রতি ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয় এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থায়ী হয় না, এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল প্লাটফর্ম ডি-মা এর নেতৃত্বে পরিচালিত হবে।

সে ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে আস্থা বিশ্বাস ও একতাবদ্ধতা তৈরি হবে এবং ব্যবসা দীর্ঘস্থায়ী হবে। এক পর্যায়ে বিদেশি বিনিয়োগের উপর নির্ভর করতে হবে না কারণ ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে বৃহৎ বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি হবে বাংলাদেশে।

বেকারদের যেভাবে ভাতা দিবে ডি-মা: ডি-মা সকল বিনিয়োগের উপর এককালীন ২ শতাংশ চার্জ হিসেবে এবং প্রতি মাসের ব্যবসায়ের প্রফিটের ৫ শতাংশ থাকবে ডি-মা’র। ডি-মা উক্ত সকল প্রফিটের ২০% রাখবে এই এ্যাপসটি পরিচালনার জন্য আর বাকি ৮০ শতাংশ রাখবে বেকারদের বেকার ভাতা দেওয়ার জন্য।

ডি-মা এর মাধ্যমে যখন হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়েগের উপর এবং মাসিক যে বিশাল অংকের প্রফিট আসবে সেখান থেকে বেকারদের জন্য মিনিমাম ৫০০০/- টাকা করে বেকার ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এখানে ডি-মার প্রফিটকে ৫০০০/- দিয়ে ভাগ করে যে সংখ্যা বের হবে ওই সংখ্যাই হচ্ছে বেকারদের সংখ্যা।

আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করবে ডি-মা: ডি- মায়ের আরেকটি বড় কার্যক্রম হচ্ছে ব্যবসায়ীদের লেনদেন। প্রত্যেক ব্যবসায়ীদের কমবেশি ডিউ থাকে। এই ডিউ এর কারণে অনেক বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উঠে আসতে পারে না। আর এই ডিউ সহজে আইনের মাধ্যমেও কালেকশন করাও কঠিন হয়ে পরে।

এখানে প্রত্যেক ব্যবসায়ী ডি-মায়ের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবে। যেমন রহিম নামে একজন ব্যবসায়ী করিম এর কাছ থেকে ১০,০০০/- টাকা মূল্যের পণ্য কিনবে, সেক্ষেত্রে রহিম পণ্যের বিনিময় ৫,০০০/- টাকা প্রদান করবে অবশিষ্ট টাকা বাকিতে প্রদান করতে চায়, সেক্ষেত্রে রহিমকে ৫,০০০/- টাকা ডি-মাতে জমা দিতে হবে, আর করিম পণ্য প্রদান করিলে রহিম ডি-মা এপস্ এর মাধ্যমে কনফার্ম করার সাথে সাথে করিমের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে। এখানে অবশ্যই ডি-মায়ের সাথে ব্যাংকিং ফ্যাসিলিটি যুক্ত থাকবে। এতে করে পণ্য নিয়ে একে অপরকে প্রতারিত হওয়া বা করার সুযোগ থাকবে না।

একই সাথে বাকি টাকা রহিম কবে দিবে সেটা ডি-মা এপস্ এর মাধ্যমে অবশ্যই জানাতে হবে। এবং সেই তারিখের ভিতরে টাকা প্রদান না করলে রহিম ডি-মা এর ব্লক লিস্টে স্বয়ক্রিয়ভাবে চলে যাবে। আর ব্লক লিস্টে কারও নাম থাকলে সে ব্যক্তি দেশের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।

যেমন: সরকারী কোন বেতন-ভাতা পাবে না, পাসপোর্ট-ভিসা প্রসেস হবে না, ব্যাংক সার্ভিস বন্ধ থাকবে, ব্যবসায়ীক কোন ডকুমেন্ট প্রসেস করা যাবে না, চাকুরীর আবেদন করা যাবে না, কলেজ বা ভার্সিটিতে ভর্তি নিষেধাজ্ঞাসহ ইত্যাদি প্রতিবন্ধকতা সরকারীভাবে তৈরী করা গেলে ডি- মার উদ্দেশ্য সফল ভাবে সম্প্ন করা সম্ভব হবে।

এতে করে কোনো ব্যবসায়ী টাকার জন্য কাস্টমারের পিছনে পিছনে ঘুরতে হবে না, নির্ধারিত সময়ের ভিতর টাকা পেয়ে যাবে। দেশে ব্যবসা’র ক্ষেত্রে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সময় মত পাওনা আদায় করা।

এক্ষেত্রে একজন ছোট মুদির দোকানিও বাকিতে পণ্য দিতে গেলে ডি-মায়ের সহায়তা নিবে এবং কোন খাতা-কলম ব্যবহার করা ছাড়াই সয় মতন টাকা পেয়ে যাবে। ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে ২% চার্চ করবে ডি-মা। ব্যবসায়ীরাও তাদের লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য ২% দিতে কার্পন্য করবে না। আর প্রাপ্ত প্রফিটের ৮০% বন্টন হবে বেকারদের জন্য।

বিজ্ঞাপনে ডি-মা: ডি মায়ের আরেকটি সেবা হচ্ছে বিজ্ঞাপন। বর্তমানে বিজ্ঞাপনের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং বৃহৎ প্লাটফর্ম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন অল্প খরচে এই সোশ্যাল মিডিয়াতে দিয়ে থাকে। যে কারণে শত শত কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট থাকে ভুয়া, যার কারণে বিজ্ঞাপনদাতার উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়না। অন্যদিকে ডি-মাতে অল্প খরচে বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে। এখানে কোন ভুয়া আইডি থাকবে না কারণ সকলেই তাদের ন্যাশনাল আইডি দিয়ে একাউন্ট খুলবে। তাই বিজ্ঞাপনদাতার উদ্দেশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনায় দ্বিগুণ সফল হবে, অন্যদিকে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। আর এই বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত প্রফিটের ৮০% বন্টন হবে বেকারদের জন্য।

ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেবে ডি-মা: ডি-মায়ের অন্য আরেকটি মানবিক ফাংশন হচ্ছে ক্ষুধার্তকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা। গরীব শ্রেনীর মানুষ ছাড়াও অনেক পরিবার যেকোন কারণে তাদেরকে একবেলা দু বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে! ক্ষেত্রবিশেষে এদেরকে খাওয়ানোর কেউ থাকেনা কিংবা কারও কাছে চেয়ে খাওয়ার কোন সুযোগ থাকেনা।

এক্ষেত্রে তারা ডি-মায়ের মাধ্যমে খাবারের রিকোয়েস্ট পাঠাবে। আশেপাশে এ্যাপস্ ব্যবহারকারী যে কেউ রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে খাবার পৌছে দিবে। আর তার বিনিময়ে সহায়তাকারী কোন পেমেন্ট পাবে না, সে পাবে ডি-মা পয়েন্ট। আর এই পয়েন্ট যার যত বেশি থাকবে বেকার ভাতা পাওয়ার অগ্রাধিকার তার ততই বেশি থাকবে। এ পয়েন্টের জন্য একে অপরকে সাহায্য করতে প্রতিযোগীতায় করবে।

দেখা যাচ্ছে ডি-মা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন বিপ্লব ঘটাবে তেমনি মানুষের ভিতরে সাহায্য-সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করা সহ নানা সমস্যার সমাধান দিবে। আর্টিফিসিয়াল সফটওয়ারের তরুন উদ্দোক্তা ইমতিয়াজ উদ্দিনের উদ্ভাবিত এই আইডিয়াটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকারি সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। এবং সরকারের একটি সংস্থা বা অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেলে ডি-মা’র প্রতি মানুষের বিশ্বাস বাড়বে অন্যদিকে ডিজিটাল বিপ্লবের মাধ্যমে দেশও এগিয়ে যাবে।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব