জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা আজ (১০ ফেব্রুয়ারি)। রাষ্ট্রপক্ষ সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছে। অন্যদিকে সবাই খালাস পাবেন বলে প্রত্যাশা আসামি পক্ষের আইনজীবীর।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর গোলাম সারোয়ার খান জাকির বলেন, ‘এ মামলায় মোট আসামি ৮ জন। ২ জন পলাতক। আর বাকি ৬ জন কারাগারে। আমরা এ মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, সাক্ষী ও আইনের ব্যাখ্যা আদালতে উপস্থাপন করেছি। আমরা আশা করি সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।
অপরদিকে সকল আসামি মামলা থেকে খালাস পাবেন বলে আশা করছেন তাদের আইনজীবী নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আসামিরা এই মামলা থেকে খালাস পাবেন বলে আমরা আশা করি। আমরা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় আদালতে দেখিয়ে দিয়েছি আসামিরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। এ ঘটনার সঙ্গে আসামিদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। তাদের মধ্যে একজন সাক্ষীও সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বলতে পারেনি। শুধু এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আসামিদের নাম বলেছেন। তাছাড়া মামলার অভিযোগপত্রে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য দিতে পারেনি। সুতরাং আমরা আশা করি এ মামলায় সব আসামি খালাস পাবেন।’
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার জন্য বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেন। এ মামলায় মোট ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। মামলায় প্রথম দু’জন আসামি পলাতক রয়েছেন।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের নিজ অফিসে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সেদিন বিকেলে তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান। চার্জশিটে ৮ জনকে অভিযুক্ত ও ১১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।