মিয়ানমারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং অভ্যুত্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে নতুন করে নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সোমবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম জনসমক্ষে এলেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেন, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ছিল কারচুপিতে ভরা। ভোটার তালিকাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তাঁর বক্তব্যে বিক্ষোভকারীদের প্রতি হুমকির চেয়ে এই অভ্যুত্থানের কারণ ব্যাখ্যার দিকে বেশি গুরুত্ব ছিল।
অভ্যুত্থানের পর দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলা হয়েছিল, গত বছরের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে অনেক দলের অংশগ্রহণে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটার তালিকায় ব্যাপক অসামঞ্জস্য ছিল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (ইউইসি) বিষয়টির মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা অবশ্যই জনগণের কাছ থেকে আসা উচিত। কিন্তু গত সাধারণ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় ভয়াবহ প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, যা একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র নিশ্চিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এদিকে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আজ টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। এতে যোগ দেয় দেশটির হাজারো মানুষ। বৌদ্ধভিক্ষুরাও এদিনের বিক্ষোভে যোগ দেন। রাজধানীতে পুলিশ মারমুখী হয়ে ওঠে। তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সোমবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনসহ অন্যান্য শহর-নগরের রাস্তায় নেমেছেন হাজারো বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীরা সেনাশাসনের অবসানের পাশাপাশি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নানা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করছেন। এসব ব্যানার-প্ল্যাকার্ড লেখা রয়েছে ‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও’, ‘আমাদের ভোটারদের সম্মান দেখাও’, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করো’, ‘সেনা অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান করো’, ‘স্বৈরতন্ত্রকে “না” বলো’ প্রভৃতি।
১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে অং সান সু চিসহ দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বন্দী করা হয়।