আগুনে বনের ৩ দশমিক ৯৮ শতক এলাকার ঘাস, লতা-পাতা, গুল্ম পুড়ে যায়
সুন্দরবনের চাঁদপাইরেঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশনের শেষ সীমানায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে বনকর্মী, সহব্যবস্থাপনা টিমের সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। আগুনে বনের ৩ দশমিক ৯৮ শতক এলাকার ঘাস, লতা-পাতা, গুল্ম পুড়ে যায়।
খুলনা অঞ্চলের বনবিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো. মঈনুদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ধানসাগর টহল ফাঁড়ির কর্মী, সহব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের (সিপিসি) সদস্যরা দ্রুত সেখানে যান এবং ফায়ার লাইন কাটার মাধ্যমে আগুন বনের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করেন। একই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করেন।
এদিকে আগুনে খবর পেয়ে মঈনুদ্দিন খান নিজে এবং সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বেলায়েত হোসেন ঘটনাস্থলে যান। আগুনে তেমন একটা ক্ষয় ক্ষতি হয়নি বলে তিনি জানান।
এদিকে আগুন লাগার কারণ ও কারা এর সঙ্গে জড়িত তা অনুসন্ধ্যানে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চাঁদপাই রেঞ্চের সহকারী বন কর্মকর্তা (এসিএফ) এনামুল হককে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ কমিটিকে সাত দিনের সময় দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি এ ঘটনায় শরণখোলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, “দুপুর ২টার দিকে সিপিজে সদস্য সোলায়মান হোসেন বনের মধ্যে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমি সিপিজি সদস্য, স্থানীয় লোক ও বনরক্ষীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। তারা এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে এতক্ষণে ধানসাগর স্টেশনের টহল ফাড়ির এক কিলেমিটার ভিতরে প্রায় ৪ শতক বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে বড় ধরনের কোনো গাছ পোড়েনি।”
আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বিড়ি-সিগারেটের অব্যবহৃত অংশ থেকে আগুন লাগতে পারে। আগুন লাগার কিছু আগে অল্প বয়সী কয়েকটি ছেলে বনের মধ্য থেকে বের হয়েছে এমন তথ্য পেয়েছি স্থানীয়দের কাছ থেকে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা এসএম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “বনবিভাগের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়নি। বনের গাছের পাতা পড়ে মাটি প্রায় দেড় দুই ফুট উচু পাতার স্তর তৈরি হয়েছে। যার ফলে মাঝে মাঝে আগুন জ্বলে উঠছে। ঝুটের কারখানায় আগুন লাগলে যেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এসএম আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, দুপুরের দিকে কিছু উশৃঙ্খল ছেলে-মেয়ে বনের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। ধারণা করছি তাদের কাছ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে
পূর্ব সূন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।