1. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. [email protected] : Maharaj Hossain : Maharaj Hossain
  3. [email protected] : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন

মিম-আলাউদ্দীন জানল না, কী ঘটে গেল তাদের জীবনে

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে যখন বাবা-মাকে গ্রেফতার করে থানা থেকে আদালতে নেয়া হয় তখন সঙ্গে ছিল মিম (৫) ও আলাউদ্দিন (৩)। এখন জেলের চার দেয়ালে মায়ের সঙ্গে কাটছে দুই শিশুর বন্দী জীবন।

গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মিম ও আলাউদ্দিনের বাবা-মাকে। কোনো স্বজন না থাকায় মায়ের সঙ্গে শিশু দুটিকেও কারাগারে পাঠান আদালত। এরপর থেকে তারা মায়ের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রয়েছে। একই কারাগারে রয়েছে তাদের বাবাও। কারাগারের উঁচু ফটকের ভেতরে কাটছে তাদের দিন।

মানিকগঞ্জের শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানা জানান, গার্মেন্টস কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরকে হত্যার অভিযোগে তাদের বাবা নাছির উদ্দিন এবং মা নাজমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) তারা হত্যার দায় স্বীকার করে মানিকগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন।

গ্রেফতারের সময় দুই সন্তানকে মা-বাবা সঙ্গে করে নিয়ে আসা হয়। কারণ শিশু দুটিকে রাখার মতো কোনো স্বজন ছিল না। আদালত মায়ের জিম্মায় দেন দুই শিশুকে।

তানিয়া সুলতানা জানান, ‘বাবা-মাকে গ্রেফতারের সময় থেকে আদালতে নেয়া পর্যন্ত তারা নিজেদের মত করে সময় কাটাচ্ছিল। বুঝতেও পারল না, তাদের জীবনে কী ঘটে গেছে। এসব বোঝার বয়স তো তাদের হয়নি, কিন্তু দুটি শিশুর জন্য কী মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত আলী জানান, শিশু দুটির নানা-নানি এবং দাদা জীবিত নেই। দাদি থাকলেও বুড়ো হয়েছে। তাদের এক চাচাকে ফোনে ডাকা হলেও তিনি শিশুদের নিতে আসেননি।

মানিকগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার শহিদুল ইসলাম জানান, শিশু দুটি তার মায়ের সঙ্গে নারী কয়েদি ওয়ার্ডেই আছে। কারাগারে ডে-কেয়ার সেন্টার না থাকলেও খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। চাইলে সেখানে তারা খেলতে পারবে। ব্যবস্থা আছে পড়াশুনারও। শিশুদের শরীরে শীতের পোশাক নেই জানিয়ে জেল সুপার বলেন, আগামীকাল তিনি দুটি শীতের পোশাক কিনে দেবেন।

মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ জানান, শিশুর অধিকার তার মায়ের কাছে থাকা। দুধের শিশু মাকে ছাড়া বাইরে থাকতে পারে না। এছাড়া অনেকেরই লালন-পালন করার মতো স্বজন নেই। এ কারণে নিরপরাধ হলেও শিশুদের তার মায়ের সঙ্গে কারাগারে পাঠান আদালত। যাতে তারা মাতৃস্নেহে থাকতে পারে।

জেল কোড অনুসারে কারাগারের ভেতরে থাকা কোনও শিশুর বয়স ছয় পার হলে তাকে বাইরে থাকা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। আর যাদের কোনও স্বজন থাকে না, তাদের সরকারি শিশু পরিবারে পাঠানো হয়। আর ৬-১৮ বছর বয়সী কোনো শিশুকে কারাগারে রাখা হয় না।

উল্লেখ্য, নাজমা আক্তার ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি মেসে রান্না করতেন। ওই মেসে খেতেন গার্মেন্টস কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। একদিন হুমায়ুন কৌশলে তাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। সেই দৃশ্য হুমায়ুন মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। এরপর সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিবার কাছে আসতে বাধ্য করে নাজমাকে। নাজমা হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পায়নি। ক’দিন নাজমার স্বামী ঘটনা জেনে যায়।

এরপর তারা হুমায়ুনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নাজমার বাবার বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া চরে হুমায়ুনকে বেড়াতে নিয়ে আসেন । রোববার (৩১ জানুয়ারি) বাবার বাড়িতে পিঠার সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয় হুমায়ুনকে। এরপর সন্ধ্যায় পাশ্ববর্তী পাগলার চরে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নির্জন বালুচরে স্বামী-স্ত্রী মিলে মুখে ও মাথায় বাটখারার আঘাতে হুমায়ুনকে হত্যা করে। পরে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৪ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব