শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) জ্যেষ্ঠ এক নেতাকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরাল করার বার্তা দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
শুক্রবার ভোরের আগে আগে উইন টাইনকে ইয়াংগনে তার মেয়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এনএলডি’র গণমাধ্যম কর্মকর্তা কি টো-র বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্ট্রেইট টাইমস।
বিবিসিকে টাইন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সু চিসহ এনএলডির বেশিরভাগ নেতাকেই গ্রেপ্তার করেছিল।
যে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ, সেই নির্বাচনে সু চির দল নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। দেশটির নির্বাচন কমিশন ভোটে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতাও পায়নি।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে এবং সু চিসহ বন্দিদের মুক্তি দিতে আহ্বান জানান।
ওয়াশিংটন মিয়ানমারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দিয়ে রেখেছে।
শুক্রবার ভোরের আগে আগে টেলিফোনে বিবিসির সঙ্গে কথোপকথনে উইন টাইন জানান, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে রাজধানী নেপিডোতে নিয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে আটক করার কথা বললেও ঠিক কী অভিযোগ, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
মিয়ানমারে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
“আমি যা বলছি তা তাদের পছন্দ নয়; যা বলছি তাতে ভয় পাচ্ছেন তারা,” বলেছেন টাইন।
এনএলডির ৭৯ বছর বয়সী এ নেতা সু চির খুবই ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে পরিচিত। মিয়ানমারে এ দফার অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী ও এর প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সমালোচনা করে একাধিক সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন তিনি।
কয়েকদিন আগে স্থানীয় ম্যাগাজিন ফ্রন্টিয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাইন অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘অসম্মানের ভেতর দিয়ে যেতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।
“এই মুহুর্তে অভ্যুত্থান করে তারা যে বিজ্ঞ নয় এবং সংকীর্ণমনা তা দেখাল তারা। ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইনের অভ্যুত্থান দেখেছি আমি। তার ওই অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারের অর্থনীতিকে ২৬ বছর ভুগতে হয়েছে,” বলেছিলেন তিনি।