রাশিয়ার স্পুটনিক ভি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রায় ৯২ শতাংশ কার্যকর। দ্য ল্যানসেট গবেষণা জার্নালে মঙ্গলবার প্রকাশিত চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং হাসপাতালে ভর্তি কিংবা মৃত্যু থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয়। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগে প্রয়োগ শুরু হওয়ায় প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিনটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা এখন প্রমাণিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাশিয়ার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রমাণ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের আগে আরও বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন এই ধাপ অতিক্রম করেছে। তাদের মধ্যে রয়েছে ফাইজার, অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না এবং জ্যানসেন ভ্যাকসিন।
যুক্তরাজ্যের প্রস্তুত করা অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং বেলজিয়ামে উদ্ভাবন করা জ্যানসেনের টিকা যেভাবে কাজ করে সেই একইভাবে কাজ করে রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিন। কোল্ড-টাইপ ভাইরাস ব্যবহার করে এটি করোনাভাইরাসের শরীরে ছোট একটি টুকরা ঢুকিয়ে দেয়। টিকা নেওয়ার পর শরীর করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি উৎপাদন শুরু করে দেয়।
রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিনটি ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মজুদ করা যায়, সেই কারণে এটি সহজে পরিবহন এবং মজুদ করা যায়। সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার থাকলেও সেগুলো হাতে ব্যাথা, ক্লান্তি এবং সামান্য তাপমাত্রা বাড়ার মতো সাধারণ বিষয়। ভ্যাকসিন গ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে মৃত্যু এবং মারাত্মক অসুস্থতার কোনও বিষয় নেই।
রাশিয়া ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনটি ব্যবহার শুরু করেছে। আর্জেন্টিনা, ফিলিস্তিনি অঞ্চল, ভেনেজুয়েলা, হাঙ্গেরি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইরানে এই ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
ল্যানসেট জার্নালে পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে প্রকাশিত এক মন্তব্যে প্রফেসর ইয়ান জোনস এবং পলি রয় বলেছেন, স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের পর তড়িঘড়ি করা, এবং স্বচ্ছতার অভাবের জন্য সমালোচিত হয়েছে। তবে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তা অত্যন্ত স্পষ্ট এবং ভ্যাকসিনের বৈজ্ঞানিক মূলনীতি প্রতিফলিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি সব বয়সী মানুষের ওপরই ভালো প্রভাব দেখিয়েছে এবং মারাত্মক অসুস্থতার ঝুঁকি কমিয়েছে।