শিকাগো থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নয়, বরং টয়লেট ব্যবহারের গাফিলতির ফলে মাঝপথ থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে। বিমানের পাইপলাইনে পলিথিন ব্যাগ ও কাপড় আটকে গিয়ে টয়লেটগুলো অকেজো হয়ে পড়লে যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতে শিকাগোতেই ফিরে যায় বিমানটি।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ মার্চ শিকাগোর ও’হারে বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করা এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। কিন্তু টেকঅফের ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই দেখা দেয় বিপত্তি।
বিমানটির ১২টি টয়লেটের মধ্যে ৮টি বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে অস্বস্তি ও বিরক্তি। বাধ্য হয়ে পাইলট শিকাগোতেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ফ্লাইট ফিরে আসার পর তদন্ত করে দেখা যায়, বিমানের পাইপলাইনে পলিথিন ব্যাগ, কাপড় ও অন্যান্য কঠিন বস্তু আটকে রয়েছে, যা টয়লেট ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দিয়েছে।
এ ঘটনায় এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা পাইপলাইনে পলিথিন ব্যাগ ও কাপড় আটকে থাকার প্রমাণ পেয়েছি, যা টয়লেট ব্যবহারে জটিলতা তৈরি করেছে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।’
ঘটনার পরবর্তীতে বিমানের ৩৪২ জন যাত্রী এ ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এ ধরনের অনিয়ম ঘটে? কেউ কেউ এয়ার ইন্ডিয়ার পরিষেবা ও ব্যবস্থাপনা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
যদিও এয়ার ইন্ডিয়া বিষয়টিকে প্রযুক্তিগত ত্রুটি হিসেবে উল্লেখ করেছে, তবে তারা যাত্রীদের টিকিটের পুরো অর্থ ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি, যারা নতুন করে যাত্রা করতে চান, তাদের জন্য বিনামূল্যে বুকিং সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের জন্য হোটেলে থাকার ব্যবস্থাও করেছে এয়ারলাইন্স সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বিমানের টয়লেটে কম্বলের ছেঁড়া অংশ, অন্তর্বাস, এমনকি শিশুর ডায়াপার ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষ বহুবার সতর্ক করলেও, যাত্রীদের অসচেতনতার কারণে এমন বিপত্তি বারবার দেখা দিচ্ছে।
বিমানের মতো সংবেদনশীল পরিবেশে টয়লেট ব্যবহারে আরও বেশি সচেতনতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এয়ার ইন্ডিয়া ভবিষ্যতে এ ধরনের সমস্যা এড়াতে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে।