মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) একটি মার্কিন সামরিক বিমান সি-১৭ টেক্সাসের সান আন্তোনিও থেকে ২০৫ জন ভারতীয় নাগরিককে বহন করে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয়।
অভিবাসী প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ফ্লাইটের সবচেয়ে দূরবর্তী গন্তব্য হচ্ছে ভারত। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা টেক্সাসের এল পাসো এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো থেকে আরও ৫ হাজার অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এর আগে মার্কিন সামরিক বিমান অভিবাসীদের গুয়াতেমালা, পেরু ও হন্ডুরাসে ফেরত পাঠিয়েছে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন জরুরি অভিবাসননীতি ঘোষণা দিয়ে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। এখন পর্যন্ত ছয়টি বিমানে লাতিন আমেরিকায় অভিবাসীদের পাঠানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে দুটি বিমান কলম্বিয়ায় অবতরণ করতে পারেনি।
কারণ কলম্বিয়া মার্কিন সামরিক বিমানের প্রবেশে বাধা দেয় এবং নিজস্ব বিমানে অভিবাসীদের ফিরিয়ে নেয়।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করে সামরিক বিমানে তুলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছি।
ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২৭ জানুয়ারির ফোনালাপে অভিবাসন ইস্যুতে আলোচনা হয়। ট্রাম্প বলেন, মোদি এই বিষয়ে ‘সঠিক পদক্ষেপ’ এবং অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফিরিয়ে নেবেন।
ব্লুমবার্গ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসী চিহ্নিত করেছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ কর্মীদের জন্য ইস্যু করা এইচ-১বি ভিসার বড় অংশই ভারতীয়দের দখলে।
অনুপ্রবেশকারী এবং নির্দিষ্ট অপরাধে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের আটক ও প্রত্যাবাসনে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের দিনই মার্কিন কংগ্রেস একটি বিল অনুমোদন করে।
কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নে মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে, সামরিক ঘাঁটিতে অভিবাসীদের রাখার ব্যবস্থা করেছে এবং সামরিক বিমান ব্যবহার করে তাদের ফেরত পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও সামরিক বিমান ব্যবহার করে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো ব্যয়বহুল।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একেকজন অভিবাসী ফেরত পাঠাতে সামরিক বিমানের খরচ প্রায় ৪ হাজার ৬৭৫ ডলার, যা টেক্সাসের এল পাসো থেকে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট ক্লাস টিকিটের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি।