সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে যাতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত বা এর অপব্যবহারে নীতিভ্রষ্ট না হয়, সে জন্য ১৬ বছরের কম বয়সীদের এটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। এটি আগামী এক বছর পর কার্যকর করা হবে। যে প্রযুক্তি কোম্পানি এই আইন ভঙ্গ করবে তাদের অন্তত ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেট এই আইনের অনুমোদন দিয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, ‘ক্ষতিকর’ সামাজিকমাধ্যম থেকে শিশুদের রক্ষায় এই আইন প্রয়োজন। তার এই মতকে দেশটির অনেক বাবা-মা ই সমর্থন করেন।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কীভাবে কার্যকর করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রাইভেসি এবং সামাজিক সংযোগের ওপর এটির প্রভাব কেমন হবে সেটিও স্পষ্ট নয়।
গত সপ্তাহে সংসদের নিম্নকক্ষে আইনটি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ। ওই সময় তিনি বলেন, ‘এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা চাই তরুণ অস্ট্রেলিয়ানরা সত্যিকার অর্থে একটি শৈশব পাক। আমরা চাই বাবা-মায়েরা যেন শান্তি পান।’
এই আইনে উল্লেখ করা হয়নি কোন কোন সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী এ সিদ্ধান্তগুলো নেবেন। এক্ষেত্রে ই-নিরাপত্তা কমিশনারের কাছ থেকে পরামর্শ নেবেন তিনি।
তবে গ্যামিং এবং ম্যাসেজিং প্লাটফর্মগুলো নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। এ ছাড়া ইউটিউবের মতো যেসব সাইটে অ্যাকাউন্ট ছাড়াই প্রবেশ করা যায় সেগুলোও হয়ত নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
সমালোচকরা আরও বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ভিপিএন ব্যবহার বেড়ে যেতে পারে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার যে কেউ ভিপিএন ব্যবহার করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সহজে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সরকার যেসব প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে সেগুলোও ঠিক মতো কাজ করবে কি না সেটিও নিশ্চিত নয়।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের আর কোনো দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ নিয়ে এত কঠিন আইন করা হয়নি। এ আইনের ফলে অস্ট্রেলিয়ায় ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার পাশাপাশি টিকটকও ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে । অন্যথায় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।