মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ‘গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বড় বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের প্রতি দায় থাকতে হবে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ব্রিটিশ শাসনামলে পুলিশ বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল নিপীড়নমূলক বাহিনী হিসেবে। ব্রিটিশ আইনের ধারাবাহিকতায় এ প্রতিষ্ঠানের চরিত্র এখনও তেমনি রয়েছে। বিশেষত রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারা থাকেন তারাই এই বাহিনীকে নিপীড়ক বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করে।
বিজ্ঞাপন
সভায় বক্তব্য দেন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, শাসনব্যবস্থাকে সংস্কার করতে হবে। শাসনব্যবস্থা সংস্কার না করে শুধু একটি বাহিনীকে সংস্কার করলে তার পরিপূর্ণ সুবিধা পাওয়া যাবে না। সর্বশেষ রেজিমে যে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল তা একটা ভয়ংকর ব্যবস্থা ছিল। এখানে আইনের কোনো শাসন ছিল না।
পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান আবু সাঈদ বলেন, পুলিশ সংস্কার করতে সরকারের শর্ট টার্ম, মিডল টার্ম, লং টার্ম সব ধরনের পলিসি আছে। কিন্তু রাজনীতিবিদেরা কি আসলেই চান পুলিশ জনগণের পক্ষের হোক? প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে বিদ্যমান আইন দিয়ে এবং এই পুলিশ দিয়েই ঠিকমতো কাজ করা সম্ভব।
বিগত সরকার কীভাবে পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছেন তা তুলে ধরেন মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক সি আর আবরার। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বড় বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের প্রতি দায় থাকতে হবে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সুযোগ আর আমাদের আসবে না। এটা হারালে আরও হয়ত ৫০ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
সভায় সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, পুলিশ তৈরির বর্তমান পদ্ধতি একটা সাধারণ মানুষকে খুনিতে পরিণত করে। যে ছেলেটা গ্রামের লাজুক, পড়ালেখায় একটু দুর্বল, মাথা নিচু করে একা একা থাকে সেই ছেলেটা ৬ মাসের ট্রেনিংয়ের পরে তার বাবা, ভাইকেও খুন করতে পারে। আমরা চাই, মানুষের বিপদে যারা সবার আগে এগিয়ে আসবে সেই লোকটা পুলিশ হবে। পুলিশ কোনো অপরাধ করলে পুলিশ নিজেই তদন্ত করবে, এটা চাই না। এতে পুলিশের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।