হার্ভার্ড লাইব্রেরিতে অবাক কাণ্ড। বই বাঁধানো রয়েছে মানুষের চামড়া দিয়ে। ইউনিভার্সিটির হাউটন লাইব্রেরিতে ১৯ শতকের একটি বই বাঁধানো হয়েছিলো মানুষের চামড়া দিয়ে । এবার সেই বইটি সরিয়ে দেয়া হলো লাইব্রেরি থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ‘সতর্ক অধ্যয়ন, স্টেকহোল্ডারদের বিবেচনার’ পরে বই থেকে মানুষের চামড়ার বাঁধাই সরিয়ে ফেলা হবে এবং এই মানব দেহাবশেষের সম্মানজনক সৎকার করতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করবে’।
‘ডেস্টিনিজ অফ দ্য সোল’ নামের ঊনবিংশ শতকের বইটি ফরাসি ঔপন্যাসিক আর্সেন হাউসে লিখেছিলেন। হার্ভার্ডের বইটির কপিটি মূলত ডক্টর লুডোভিক বোল্যান্ডের, যিনি একজন ফরাসি চিকিৎসকের । বোল্যান্ড, যিনি ১৯৩৩ সালে মারা যান, তিনি যে হাসপাতালে কাজ করতেন সেখান থেকে প্রাকৃতিক কারণে মারা যাওয়া একজন মৃত রোগীর চামড়া দিয়ে বইটির বাঁধন তৈরি করেছিলেন। সেই রোগী একজন নারী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ওই নারীর সম্মতি ছাড়াই তার চামড়া সংগ্রহ করা হয় । যদিও বইটি ১৯৩৪ সাল থেকে হার্ভার্ডের সংগ্রহে ছিল, ৮০ বছর ধরে এটি মানুষের দেহাবশেষের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো ।
১৯৩৪ সালে হার্ভার্ডে আনা হয় ‘ডেস্টিনিজ অফ দ্য সোল’ । তখন এই বইয়ের সঙ্গে ছিল চিকিৎসক বোল্যান্ডের একটি চিরকুট। সেই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘মানব আত্মা নিয়ে লেখা একটি বইয়ে মানব মলাট থাকাটাই উপযুক্ত’। অজ্ঞাত ওই নারীর জীবন নিয়েও গবেষণা করছে হাফটন লাইব্রেরি। বোল্যান্ড লিখেছিলেন, ষোড়শ শতাব্দী থেকে ‘এনথ্রোপোডার্মিক’ শব্দটি বেশ প্রচলিত, যার অর্থ হচ্ছে মানুষের চামড়া দিয়ে বইয়ের মলাট করা। ওই শতকে এর প্রচলন ছিল। হার্ভার্ড বিবৃতিতে বলেছে, ‘বইটির সঙ্গে সম্পর্কিত বোল্যান্ডের স্টুয়ার্ডশিপ অনুশীলনগুলো নৈতিক মানগুলোর স্তর পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
২০২২ সালে হার্ভার্ড একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির সংগ্রহে ২০,০০০ টিরও বেশি বইয়ের বাঁধাইয়ে মানুষের দেহাবশেষ শনাক্ত হয়েছে। এতে কঙ্কাল থেকে দাঁত, চুল এবং হাড়ের টুকরো পর্যন্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে এই মানব দেহাবশেষগুলির সম্মানজনক সৎকার করার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে ।