গুলশানে নিজের বাসায় ভোটের পরিস্থিতির ওপর গণমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আপনাদের টেলিভিশন (গণমাধ্যম) ক্যামেরার ছবি কথা বলে। আমি বলছি যে, হাজার হাজার লাখ লাখ ছবি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনারা দেখতে পারছেন, কুকুরের ছবি দেখতে পারছেন ভোটকেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে, শুয়ে রোদ পোহাচ্ছে।
সেই ভোটকেন্দ্রের নাম হচ্ছে ঢাকা শহরের মেরাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এই যে পরিস্থিতি, সিংহভাগ ভোটকেন্দ্র প্রায় ভোটারশূণ্য অবস্থায়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিশ্বের মানুষ দেখছে, দেশের মানুষ দেখছে, এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ বর্জন করেছে। আজকে আমি জনগনকে আমাদের পক্ষ থেকে শুধু বিএনপির পক্ষ থেকে নয়, এই যে, ৬২টি রাজনৈতিক দল আমরা যারা এই প্রহসনের নির্বাচনকে বর্জন করেছি তাদের সবার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানুষকে স্যালুট জানাব একটি মাত্র কারণে যে, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনোদিন আপোষ করেনি, এবারও করবে না।
’ভোট বর্জনের আন্দোলন সফল হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘নিশ্চয়ই সফল হয়েছে। এখানে আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই, এই আন্দোলন শুধু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ যে লগি-বৈঠার আন্দোলন করে সেই লগি-বৈঠার আন্দোলন আমরা করি না।
আমাদের অনেকে অভিযোগ করেছে যে, আপনারা এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে সরাতে পারবেন না। কারণ তারা এমন একটি রাজনৈতিক দল যে, তাদের যে কার্যপদ্ধতি, তাদের যে বিভিন্ন প্রক্রিয়া, আজকে ১৫ বছরে বিএনপি সহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এক লাখ বানোয়াট গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে, ৫০ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
আমি ছোট একটি প্রশ্ন করতে চাই, পৃথিবীতে ২ শটি দেশ আছে আপনারা কি দেখাতে পারবেন যেখানে এ রকম ঘটনা ঘটেছে?’
নির্বাচন ঘিরে বিএনপির ডাকা হরতাল সফল হয়েছে দাবি করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘হরতাল না হলে তো ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি এমন হতো না। আগামীকাল দেখবেন কোন কেন্দ্রে কত ভোট পড়ে তাহলে বুঝবেন মানুষ ভোটকেন্দ্রে গেল না কেন? সরকার এটাকে বলে ইংরেজিতে কুকিংআপ। কত শতাংশ ভোট পড়েছে এটা সরকার করতে পারে, সরকার করুক, সরকার পাঁচ শতাংশ বলতে চাইলে ৫ বলবে, ৫০ শতাংশ বলতে চাইলে ৫০ বলবে, ৯৯ শতাংশ চাইলে ৯৯ বলবে এমনকি ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো একটি কেন্দ্রে এক শ পাঁচ শতাংশও বলতে পারে। সেটা আমাদের কনসার্ণ না।’
বিএনপির পরবর্তি কর্মসূচি কি হবে, জানতে চাইলে মঈন খান বলেন, ‘হোয়াট ইজ নেক্সট।
বাংলাদেশের মানুষ শুধু হোয়াট ইজ নেক্সট জানতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ একটি জিনিস চায় তারা কথা বলতে চায়, তারা ভোট দিতে চায়, তারা এ দেশে গণতন্ত্র দেখতে চায়। এই তিনটি উদ্দেশ্যে আমরা মানুষের পক্ষ হয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা এই তিনটি জিনিস এ দেশের মানুষকে ফিরিয়ে এনে দেব।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সবাই কেন্দ্রে যায়নি দাবি করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘বাংলাদেশে যেমন আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে সেটা তো অস্বীকার করা যাবে না। আমি সেটা বলছি না। আওয়ামী লীগেরও এই দেশে সমর্থক আছে, বিএনপিরও সমর্থক আছে। বিএনপির সমর্থকদের আজকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তারা ভোটে নাই।
আমরা প্রতিবাদ হিসেবে ভোট বর্জন করেছি। আওয়ামী লীগের কিছু লোক হয়ত ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে। কিন্তু ছবি দেখলে বুঝবেন যে, নগণ্য সংখ্যক কর্মী-সমর্থক গেছে। এটা কেন? তারও কারণ আছে। আওয়ামী লীগের ভোটাররা জানে যে, আমার প্রার্থী তো পাস করে বিজয়ী হয়ে গিয়েছেন। আমি খালি খালি খামখা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে টাইম কেনো নষ্ট করব? সেই কারণে আজকে ভোটকেন্দ্রে ভোটার শূণ্য অথবা নগণ্য দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কোনো পারপাস নেই।’