আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করেছে তৃণমূল বিএনপি। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩০টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। বাকি আসনগুলোতে পরবর্তী সময়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে৷ দল ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনের তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন৷ এ সময় দলের চেয়ারম্যান সমশের মবিন চৌধুরী ও নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা সেলিমা হুদা অনুপস্থিত ছিলেন।
তৃণমূল বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় থাকা সাবেক সংসদ সদস্যরা হলেন মৌলভীবাজার-২ আসনে এম এম শাহীন, লক্ষ্মীপুর-১ আসনের এম এ আউয়াল, সাতক্ষীরা-৪ আসনের এইচ এম গোলাম রেজা, ঝিনাইদহ-২ আসনে নুরুদ্দিন আহমেদ, মেহেরপুর-২ আসনে আবদুল গণি।
দলের চেয়ারম্যান তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন সমশের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ), নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা হুদা মুন্সিগঞ্জ-১, মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ–১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।
এদিকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করা ‘প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরাম’ দলটির প্রার্থীরা তৃণমূল বিএনপি থেকে নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম-৫ আসনে এবং সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন ফেনী-৩ আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সাবেক ভিপি নাজিম উদ্দিন এবং জি এস আজিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন এই দলটির নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই।
তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে ‘প্রগতিশীল ইসলামী জোট’ নামে একটি রাজনৈতিক মোর্চা। ১৫–দলীয় এই জোটের আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল লক্ষ্মীপুর-১ আসনে এবং সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম খান ময়মনসিংহ-২ আসন থেকে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন।
গাজীপুর-১ আসনে তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তারের ছেলে মাইনুল হাসান তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন গোপালগঞ্জ-৩-এ কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি তৃণমূল বিএনপি। এ বিষয়ে তৈমুর আলম বলেন, ‘গোপালগঞ্জ-৩ আসনে একজন প্রার্থী ছিলেন কিন্তু তাঁর ব্যাংকঋণ রয়েছে। আমরা বিকল্প প্রার্থী খুঁজছি।’
তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তালিকায় বেশ কিছু আসনেই একাধিক প্রার্থী রয়েছে। এ বিষয়ে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ঠুনকো কারণে অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। মনোনয়ন ফরম জমা ও প্রত্যাহারের মধ্যে বেশ কিছুটা সময় পাওয়া যায়। এর মধ্যে এলাকায় যাঁদের জনপ্রিয়তা বেশি থাকবে, তাঁদের দলীয় প্রতীক দেওয়া হবে।
দলের প্রার্থী নির্বাচনে মধ্যবিত্ত ও জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বড়লোকের আড্ডাখানা হয়ে গেছে সংসদ। আমরা এই ধারা ভাঙতে চাই। সমাজের উঁচুতলার লোকদের মনোনয়ন সেভাবে দিইনি।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে তৈমুর আলম বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। কিন্তু সরকার গঠন তো ঠেকানো যায়নি। এবারও কেন সরকারকে ব্ল্যাংক চেক দেব? তাদের ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পাস করতে দেব না।’