রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের একাংশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনে আবারও জনগণকে সেবা করার সুযোগ দিতে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণ দেশের স্বাধীনতা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়। জনগণের ভাগ্য পাল্টেছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে এবং আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ বুধবার বিকেলে এ কথা বলেন।
রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। উন্নয়নশীল দেশ, এর পরে উন্নত দেশ। ডেলটা প্ল্যান করে দিয়েছি। সবক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আজকের তরুণ প্রজন্মই হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং আরও উন্নত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশে হাত নেড়ে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অভিনন্দনের জবাব দেন তিনি। রংপুর, ২ আগস্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশে হাত নেড়ে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অভিনন্দনের জবাব দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একমাত্র নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নতি হয়। কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ায় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাবে।
কাজেই নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও আপনারা আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। সেটাই আমি আপনাদের কাছে চাই।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অনুরোধ করলে সবাই দুই হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মা ও ভাইদের হারানোর পর থেকে তিনি বাংলাদেশের জনগণকেই তাঁর আপনজন বিবেচনা করেছেন এবং প্রয়োজনে দেশবাসীর জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাবা, মা, ভাই—সব হারিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের জনগণ, এটাই তো আমার সংসার, এরাই আমার আপনজন। আপনাদের মাঝেই আমি খুঁজে পাই আমার বাবা-মার স্নেহ, ভাই ও বোনের স্নেহ। কাজেই আপনাদের জন্য বাবার মতো যদি প্রয়োজন হয়, এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জীবন দিতেও আমি প্রস্তুত।’
প্রধানমন্ত্রী বেলা সাড়ে তিনটার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।
সমাবেশে তিনি দুই হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে ২৭টি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অন্য ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে তিনি বেলা সোয়া একটায় হেলিকপ্টারযোগে রংপুর সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে পৌঁছান। সেখান থেকে তাঁকে রংপুর সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি রংপুর বিভাগীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম সায়াদত হোসেন বকুল প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন। মঞ্চে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সমাবেশস্থল রংপুর জিলা স্কুল মাঠ ও এর আশপাশের এলাকা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী, সমর্থকসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে মুখর হয়ে ওঠে। আশপাশের সড়কগুলোতে ছিল বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি।