1. [email protected] : দেশ রিপোর্ট : দেশ রিপোর্ট
  2. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  3. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন

ঝালকাঠি সড়ক দুর্ঘটনায়, সদর হাসপাতালে লাশের সারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩

ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। জেলা সদর হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকায় স্বজন হারানোর শোকে অনেককে বিলাপ করতে দেখা গেছে। গোটা হাসপাতালে শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে।
হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে বরিশালে যাচ্ছিলেন রাসেল মোল্লা। তবে বাবাকে বরিশালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি তাঁর। এর আগেই ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়েছেন তিনি। তাঁদের লাশ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে। বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়ে বারবার অচেতন যাচ্ছিলেন রাসেল মোল্লা। এ দুর্ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন একটি পুকুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস পড়ে যায়। এতে ওই বাসের অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে রাসেল মোল্লার বাবা সালাম মোল্লা (৭৫) ও বড় ভাই শাহিন মোল্লাও (৪০) ছিলেন। তাঁদের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে রাখা লাশের সারি থেকে সালাম ও শাহিন মোল্লার লাশ শনাক্ত করেছেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় রাসেল মোল্লা নিজেও গুরুতর জখম হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত আরও অন্তত ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোঃ রাসেল মোল্লা (৩৫) বলেন, ‘আমি বাসের চালকের পেছনের আসনে বসা ছিলাম। বাসের চালক যাত্রার শুরু থেকেই গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর জন্য বারবার সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলছিল। গাড়িচালনায় তার মনোযোগ ছিল না।’
রাসেল মোল্লা আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বরিশালে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলাম। এ ঘটনায় আমার বাবা সালাম মোল্লা নিহত হয়েছেন। আমার বড় ভাই মো. শাহিন মোল্লার (৪০) লাশও খুঁজে পাইছি।’
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী সালাম মোল্লা ও ছেলে শাহিন মোল্লার মৃত্যুর খবর শুনে মাহিনুর বেগমের আহাজারি। আজ দুপুরে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভার উত্তর পূর্ব ভান্ডারিয়া গ্রামে
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী সালাম মোল্লা ও ছেলে শাহিন মোল্লার মৃত্যুর খবর শুনে মাহিনুর বেগমের আহাজারি। আজ দুপুরে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভার উত্তর পূর্ব ভান্ডারিয়া
এ দুর্ঘটনার জন্য চালককে দায়ী করে রাসেল মোল্লা বলেন, ‘আমি যদি চালককে হাতের কাছে পাইতাম, তবে নিজ হাতে তাঁর বিচার করতাম। তাঁর জন্য আমার বাবা চোখের সামনে প্রাণ হারাইছে। এ ঘটনায় চালকই একমাত্র দায়ী। যাত্রী ওঠানোর জন্য শুরু থেকেই সে মরিয়া হইয়া গেছিল। সড়কে দৃষ্টি না রেখে সুপারভাইজারকে বারবার যাত্রী ওঠানোর জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। পাশাপাশি বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল। হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কাছে এসে গাড়িটি পুকুরের মধ্যে নামিয়ে দেয়। এ জন্যই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে। আমি তাঁর বিচার চাই।’
এ দুর্ঘটনায় ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী গ্রামের প্রবাসী রাসেল মিয়া (৩৫) তাঁর স্ত্রী সাদিয়াকে (২৫) হারিয়েছেন। সাদিয়ার লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁরা ঐ বাসে ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল হয়ে শ্বশুরবাড়ি শরীয়তপুরে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, ‘বাসার স্মৃতি’ নামের বাসটি আজ সকালে ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। পথে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি সদরের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন ছত্রকান্দা এলাকার একটি পুকুরে বাসটি পড়ে যায়। এতে ঐ বাসের ১৭ যাত্রী নিহত হন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সদর হাসপাতালে সর্বমোট ১৭টি মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। এঁদের মধ্যে আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিনজন শিশু। তবে নিহত সবার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
ঝালকাঠি সদর থানার এসআই গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, পুলিশের রেকার দিয়ে বাসটি পুকুর থেকে তোলা হয়েছে। তবে বাসের মধ্যে আর কোনো লাশ পাওয়া যায়নি।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব