যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরের গত ৭ মাসে রাজস্ব আদায় ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। যা গত অর্থবছরে ছিল ১৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ফলে এ অর্থবছরে জুলাই থেকে জানুয়ারি পযর্ন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৪৩৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। যার প্রবৃদ্ধি ২১০ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ২২২৫ দশমিক ৭৬ কোট টাকা।
শুধু জানুয়ারিতেই রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪৬ দশমিক ২৬ কোটি টাকা। যার প্রবৃদ্ধি ১০২ দশমিক ৪ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৪৩ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের আগস্ট-অক্টোবরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক সোয়াবিন এক্সট্রাক্ট ভারতে রফতানি হওয়ায় কমে যায় আমদানি। ফলে এ ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে থাকলেও বিগত বছরগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউস।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোল বন্দরে সক্ষমতা বাড়লে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন নয়। তবে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় আমদানিকারকরা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের কালিতলা পার্কিংয়ে প্রতিদিন ৬ হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে রাখা হচ্ছে সিরিয়ালের নামে। প্রতিটি ট্রাক থেকে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ।
কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বেনাপোল বন্দর ও রেলপথে আমদানি পণ্যের রাজস্ব আদায়, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, ডিজিটালি অটোমেশন, চোরাচালান ও শুল্ক ফাঁকি রোধ, নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না নেওয়া পণ্যের নিলাম, ব্যবহারের উপযোগিতা হারানো কিংবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পণ্য ধ্বংস ইত্যাদি ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মিথ্যা ঘোষণা, জাল জালিয়াতি ও শুল্কফাঁকি রোধে অসাধু আমদানিকারক ও সি অ্যান্ড এফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কাস্টম হাউস। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে ১৭টি লাইসেন্স এবং চূড়ান্ত বাতিল করা হয়েছে ৩টি।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের কালিতলা পার্কিংয়ে পণ্যবোঝাই ট্রাক দিনের পর দিন আটকে রেখে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হয়। ফলে একটি ট্রাকের বাংলাদেশে আসতে সময় লাগছে ২০-২৫ দিন। মোটা অঙ্কের লোকসান গুণতে হয় আমদানিকারকদের। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বেড়েছে। উন্নয়ন কাজ শেষে হলে রেলপথে বাড়বে বেশি আমদানি।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, করোনার মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের পণ্য কম এসেছে। তবে ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে কাজ চলছে। সক্ষমতা বাড়ালে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব।