নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া ঘুরতে কার ভালো না লাগে। আর আমাদের দেশের ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ঘুরতে যাওয়ার কথা মনে হলে শুরুতেই তো মাথায় আসে সেন্টমার্টিন’র কথা। এমন ভ্রমণে অনেক সময় দেখা যায়, চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতেই শেষ হয়ে যায় অনেকটা সময়। যদি এই সময়টাও সস্তিতে কাটানো যায় তবে মন্দ কি? অথচ এমন সুযোগ থাকলেও বিষয়টি জানেন না অনেকে।
চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিনের পথে বিলাসবহুল ক্রুজশিপে থাকছে এমন আনন্দঘন ভ্রমণের সুযোগ।
ক্রুজশিপে সমুদ্রের নীল জলোরাশী আর আকাশের মিতালী, গোধূলী বেলা, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে পৃথিবীর অনিন্দ সুন্দর প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে চট্রগ্রাম-সেন্টমার্টিনের মধ্যে চলাচল করছে জাপানি মিতসুবিশি কম্পানির রাজকীয় ক্রুজশিপ ‘বে ওয়ান’। জাহাজটি প্রত্যেক বৃহস্পতিবার চট্রগ্রামের পতেঙ্গা থেকে রাত ১১ টায় ছেড়ে পরের দিন সকাল ৭টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছায় এবং শুক্রবার সেন্টমার্টিন অবস্থান করে শনিবার সকাল ১১টায় পতেঙ্গার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭.৩০টায় এসে পৌঁছায়।
এ ছাড়া জাহাজের চারপাশের বিশাল বারান্দা ও রুফটপে আড্ডায়-গল্পে কেটে যেতে পারে চমৎকার কিছু মুহূর্ত। বিশেষ করে ভোরের আলো ফোটার পর স্বাক্ষাৎ মেলে সেন্টমার্টিনের ঐতিহ্যবাহী নীল জলরাশির। ঘুমকাতুরে অনেকেই যারা সাগর বক্ষে সকালের এই নির্মলতা এমনকি সূর্যোদয়ের দৃশ্যও মিস করেন, তাদের অজানাই থেকে যায়-কী হারিয়েছেন তারা।
ফিরতি পথে বে অফ বেঙ্গলের অপরুপ দৃশ্য উপভোগসহ গভীর সমুদ্রে সূর্যাস্ত তথা গোধূলী দেখার অনুভূতি অবর্ননীয়। একই সঙ্গে বাফেট রেস্তোঁরায় বিভিন্ন স্বাধের পেটপুজোয়ও সময়টা ভালোই কেটে যায়। যেখানে আছে কন্টিনেন্টাল ও চায়নিজসহ ট্রেডিশনাল বিভিন্ন লান্স, ডিনার ও ব্রেকফাস্ট। পাশাপাশি আছে কমন রেস্তোঁরা, একাধিক কফি হাউজ এবং আইসক্রিমবারও। নেই কেবল তামাকের দোকান। তবে ধূমপায়ীদের জন্য একটি আধুনিক স্মোকিং জোন রয়েছে।
১৮০০ আসনের ৭ তলা এ প্রমোদতরীতে আছে প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট, বাংকার বেড কেবিন, টুইন বেড কেবিন ও আরামদায়ক চেয়ারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির আসন ও স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন এবং কয়েন পরিচালিত ঝর্ণাও। জাপানের মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি এ ক্রুজশিপটির দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুট, প্রস্থ ৫৫ ফুট ও ১৮ ফুট প্রায় ড্রাফট। এর গড়গতি ঘণ্টায় ১৬ দশমিক ১ থেকে ২৪ নটিক্যাল মাইল। জাহাজটির গভীরতা ৫.৪ মিটার। এর মেইন প্রপালেশন ইঞ্জিনটি ১১ হাজার ২০০ বিএইচপি সম্পন্ন। জাহাজটিতে ক্রু রয়েছে ১৬৭ জন।
নিরাপত্তার জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক নৌরুট নির্ধারিত যাবতীয় সরঞ্জামাদি তথা ব্যবস্থাপনা। বড় কোনো বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে জাহাজের তলদেশে থাকা দুটি পাখা সংক্রিয়ভাবে খুলে যেয়ে জাহাজটির ভারসাম্য রক্ষা করবে। এই জাহাজের সর্ব নিম্ন ভাড়া (যাওয়া-আসা) ৪০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা। ইকোনমি প্যাকেজের আওতায় ইকোনমি সিটের ভাড়া ৪০০০ এবং বিজনেস ক্লাস চেয়ার-৫৪০০, ওপেন ডেক-৬৫০০ এবং বাংকার বেড-৮০০০ টাকা। প্রয়োজনীয় তথ্যে পাওয়া যাবে ০১৮৭০৭৩২৫৯১/৮ নম্বরগুলোতে। এ ছাড়াও www.bdcruise.com, www.bayonebd.com ঠিকানায়ও মিলবে টিকেট ও তথ্য।