কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে আবারো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা ১৬নং ক্যাম্পে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই ১ হাজার ২শ ঘর ছাই হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে ও পার্শ্ববর্তী ক্যাম্প এবং ঘরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে দায়িত্বরত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন জানান, বি-ব্লকের মোহাম্মদ আলীর (৩৫) ঘরের গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। পরে আগুন ক্যাম্পের ব্লক-বি ও ব্লক-সি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে ৮ এপিবিএনের অফিসার ফোর্স এবং উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের ৮ ইউনিটের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১ হাজার ২শ ঘর পুড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ১৬ ক্যাম্পের বাসিন্দা রোহিঙ্গা আবদুর রহমান ও শাহ আলম জানান, আগুন দেখার পর পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা বেরিয়ে এসেছি। তবে আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ায় ঘরের কিছু তারা রক্ষা করতে পারেনি। পরিবারের ১১ সদস্য নিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন বলে জানান তারা।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর আমরা পায়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যে হাজারখানেক ঘর পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি পরে বলা যাবে। এখন ঘর পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি উখিয়ার ২০ এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি করোনা আইসোলেশন সেন্টারে আগুন লাগে। সেই ঘটনায় হতাহত না হলেও পুড়ে যায় হাসপাতালটির ৭০ শয্যা, হয় ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি।
এছাড়াও গত বছরের ২২ মার্চ উখিয়ার তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যে ঘটনায় প্রায় দশ হাজারের বেশি ঘর পুড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এবং ঘটে ১১ জনের প্রাণহানি।