গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারাদেশ পাওয়ার পর সড়ক প্রশস্তকরণে যারা জমি দিয়েছেন তারা ক্ষতিপূরণের দাবিতে নিজ জমির চারদিকে বাঁশের খুঁটি বসিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। আজ মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বনমালা সড়কটিতে বাঁশের খুঁটি দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বিক্ষোভ করে ৩০ পরিবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারাদেশ পাওয়ার পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে জাহাঙ্গীর আলমের পদটিও নড়বড়ে হয়ে গেছে। কারণ তিনি দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত মেয়র। ফলে সড়ক প্রশস্তকরণে জমি দানকারীরা অনিশ্চয়তার পড়েছেন। তারা ক্ষতিপূরণের জন্য বাঁশের খুঁটি দিয়ে সড়ক দখল করে মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। মেয়রের তত্ত্বাবধানে গত জুন মাস গাজীপুরের সঙ্গে টঙ্গীর যোগাযোগ উন্নত করতে বনমালা সড়কটি নির্মাণ করা হয়। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের কোনো নিয়ম মানা হয়নি। ফলে সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক পরিবার ভিটেমাটা ছাড়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পাননি তারা।
এসময় সেখানে গাজীপুর পুলিশের এডিসি (দক্ষিণ) হাসিবুর রহমান উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করবেন না। জমি দিয়ে ক্ষতিপূরণ না পেয়ে থাকলে আপনারা আদালতে যেতে পারেন। কিন্তু রাস্তা তো বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে পারেন না। তিনি তাদের শান্তিপূর্ণ থেকে রাস্তা থেকে সরে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, এখানে সড়কের জন্য যারা জমি দিয়েছেন তারা ক্ষতিপূরণ দাবিতে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। সড়কের যেখানে যার জমি রয়েছে তা বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করেছেন তারা। যেকোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।
বনমালা এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা জানান, তার ৩ কাঠা জমি সড়ক প্রশস্ত করার সময় নিয়ে নেয় সিটি করপোরেশন। এসময় তারা জমির কাগজপত্রও নেয়। তার এই জমির মূল্য ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু মেয়র তাকে মাত্র ১ লাখ টাকা দিয়েছেন বলে জানান। এখন মেয়র যদি পদ হারান তবে কে দেবে আমাদের ক্ষতিপূরণ? এজন্য আমরা নিজেদের জয়গা দখল করেছি।
আরেক ভুক্তবোগী জাহানারা বেগম জানান, তার স্বামী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সামান্য বেতনে চাকরি করেন। স্বামীর সঞ্চিত টাকা দিয়ে প্রায় দেড় কাঠা জমি কিনে বাড়ি করেন। সড়ক নির্মাণে ৫০ ফুট জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কারণে তার প্রায় ১০টি ঘর ভাঙা হয়েছে। এক সময়ের বাড়িওয়ালা এখন অন্যের বাসায় ভাড়া থাকছেন। প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ পেলে অন্য কোথায় সন্তানদের নিয়ে থাকতে চান তিনি।
মাজেদা বেগম নামে একজন বলেন, আমরা তার আশায় বসেছিলাম। মেয়র বলেছিলেন, আমাদের জমি কিনে দেবেন। কিন্তু তিনি যদি মেয়র না থাকে তাহলে আমাদের কী হবে? এজন্য আমাদের জায়গাতে বেড়া দিয়েছি। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।