গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তবে সাতটি ইউনিয়নে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা ও মোটরসাইকেল মহড়া বেড়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনে উপজেলার একাংশ (৭টি ইউনিয়নে) প্রার্থীতা উন্মুক্ত হওয়ায় প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এদিকে, অপর ৭টি ইউনিয়নে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ায় প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে চরম শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। নির্বাচনের দিন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার আশংকা রয়েছে। হঠাৎ করে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা ও মোটরসাইকেল মহড়া বেড়েছে। সংঘাতের আশংকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের সরঞ্জাম তৈরি করে মজুদ রাখা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
এসবের মধ্যে রয়েছে ঢাল, সড়কি, রামদা, টেঁটা, চাইনিজ কুড়াল, গুলতি, মার্বেল, লাঠিসোটাসহ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় অস্ত্র।
নির্বাচনী পরিবেশ ভালো থাকলেও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কোনো কোনো প্রার্থী।
কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মাদ আলী খোকন সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান, নির্বাচনের ফল পরিবর্তন ও ভোট কারচুপির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আমি ও আমার কর্মী-সমর্থকরা চরম শঙ্কিত।
একই অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাজাইল ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহাবুবুল আলম সেলিম। নৌকা ভাঙচুর ও পোড়ানোর পাল্টা অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী জাহাঙ্গীর আলম।
অপরদিকে, রাতইল ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার ১৫ কর্মী-সমর্থকের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নৌকার সমর্থকরা। এতে আমার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোটারদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র ওই প্রার্থী।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬২ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ১২৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৮৯ জন প্রার্থী লড়ছেন। ইউনিয়নগুলোয় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৭৬ হাজার ৮০১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৮ হাজার ২৭৭ ও মহিলা ভোটার ৮৮ হাজার ৫২৪ জন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম জানান, নির্বাচনে ৬২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করেছি। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে একজন প্রিজাইডিং অফিসার, দুজন সহ প্রিজাইডিং অফিসার, পাঁচ সশস্ত্র পুলিশ ও ১৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ রায়হান জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রধারী পুলিশ, আনসার সদস্য ও গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।