অপচিকিৎসার অভিযোগে আবারো গ্রেপ্তার হয়েছেন বরগুনার ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ। ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে ৯ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ এর আগেও একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। বারবার গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি তার কাছে অনেকটাই যেন এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মাসুম বিল্লাহ প্রশাসনের নাকের ডগায় শহরের ফার্মেসিপট্টি এলাকায় শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। বছর তিনেক আগে মাসুম বিল্লাহ একজন শিশু বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত চেম্বারের পিওন পদে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার কেওরাবুনিয়া ইউনিয়নের চালিতাতলা গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর সাইদুল ইসলাম তার নয় মাস বয়সী ছেলে শিশু ইয়ামিনকে জ্বর ও সর্দি কাশির চিকিৎসার জন্য ভুয়া চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহর কাছে নিয়ে আসে। মাসুম বিল্লাহ শিশুটিকে দেখে জরুরী ভিত্তিতে বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্ট করানোর নির্দেশ দেন।
টেস্ট রিপোর্ট দেখে শিশু ইয়ামিনের হার্টে সমস্যা আছে বলে জানান মাসুম বিল্লাহ। এক দিন পর পর চেম্বারে এসে চারটি ইঞ্জেকশন দিতে হবে বলেও জানান তিনি। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইয়ামিনের শরীরের নিজ হাতে একটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন মাসুম বিল্লাহ। ওই ইঞ্জেকশন পুশ করার পর থেকেই ইয়ামিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাসুম বিল্লাহর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পর পরই খিচুনি দিয়ে ইিয়ামিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনায় ইয়ামিনের বাবা সাইদুল ইসলাম বরগুনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে বৃহস্পতিবার রাতে শহরের মাছ বাজার এলাকা থেকে মাসুম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, এর আগেও একাধিকবার তাকে মোবাইল কোটের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। চিকিৎসক হিসেবে কোনো বৈধতাই তার নেই। বারবার জেল জরিমানার পরেও তিনি এসব করে যাচ্ছেন। বিষয়টি তিনি জেলা পুলিশকে অবিহিত করেছেন।