বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বন্যার প্রকোপ তেমন না থাকলেও কিছু স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে উপজেলার যমুনা নদীপাড়ের মানুষদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, খুব সীমিত আকারে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ভাঙনের আতঙ্কে স্থানীয়দের অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীতে রবিবার সকাল ৮টায় পানির প্রবাহ ১৫ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে এখনো বিপদসীমার প্রায় ৩ ফুট নিচ দিয়ে পবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে যমুনা নদীর ডান তীরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সারিয়াকান্দি এলাকার কামালপুর ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামে ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। ওইসব গ্রাম এলাকার পুরাতন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থেকে বসবাসরত ২৫টি পরিবার ঘর-দোর অন্যত্র সরে নিয়ে গেছেন। এসব পরিবার পার্শ্ববর্তী হাওয়াখালী গ্রামের নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছেন।
এছাড়াও কামালপুর ইউনিয়নে টিটুর মোড় হতে কামালপুর ফকিরপাড়া, গোদাখালী, কামালপুর দক্ষিণপাড়া ও ইছামারা গ্রাম এলকায় যমুনার নদীর ভাঙনে এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সিসি ব্লক দিয়ে নির্মিত পাড় ধ্বসে গেছে। এ ধ্বসের পরিমান প্রায় ৬০০ মিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ভাঙন এখন কম থালেও সামনের দিনে যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙন আরো বাড়তে পারে। কামালপুর ফকিরপাড়ার গ্রামের মোসলেম উদ্দীন বলেন, ভাঙন এখন কম, তবে রাত করে যমুনা নদী ভাঙছে।
একই ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের শেফালী খাতুন বলেন, ভাঙনের ভয়ে রাতে আমাদের ঘুম হয় না। ভাঙনে ঘর-দোর নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা রাত জেগে থাকি।
ভাঙনের পর অস্থায়ী প্রতিরোধ হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বগুড়া অঞ্চলের সারিয়াকান্দি অফিস। জানতে চাইলে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাসকীয়া বলেন, যমুনা নদীর ডান তীর ভাঙন রোধ করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করার জন্য প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন আমরা জরুরি ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও বস্তা সম্ভাব্য ভাঙন স্থানে ফেলে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। যাতে করে ভাঙন না বাড়ে সে জন্য নদীর তীরবর্তী এলাকায় একটি পুকুর ভরাটসহ সম্ভাব্য সকল রকমের ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়া বলেন, এ এলাকায় নদীর ভাঙন প্রতিদিনের অন্যতম ঘটনা হলেও এখন আর সেটি নেই। কামালপুর এলাকায় টুকটাক ভাঙন থাকলেও আশা করি প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পটি বাস্থবায়নের কাজ শরু হলে নদী ভাঙন একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়াও নদী ভাঙনে কেউ গৃহহারা হয়ে পরলে তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী ও ঘর-দোর মেরামতের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।
[contact-form][contact-field label=”Name” type=”name” required=”true” /][contact-field label=”Email” type=”email” required=”true” /][contact-field label=”Website” type=”url” /][contact-field label=”Message” type=”textarea” /][/contact-form]