বকেয়া বেতনের দাবিতে স্টাইল ক্রাফট গার্মেন্টের শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজ বুধবার সকালে ফের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে লাঠিচার্জ করে তাদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেয়। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শ্রমিকদের কারখানার সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারীরা জানায়, কারখানাটিতে প্রায় সাড়ে ৭০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের কারো কারো সাত মাসের এবং অনেকের ১১ মাসের বেতন বকেয়া। এ ছাড়াও কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্টসহ তাদের চার বছরের বাৎসরিক ছুটি ও দুই বছরের ঈদ বোনাসের টাকা পাওনা রয়েছে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে এসব পাওনা পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ পাওনা পরিশোধের একাধিকবার তারিখ ঘোষণা করলেও তা পরিশোধ করেনি। টাকার অভাবে ঘর ভাড়া, দোকান বাকী পরিশোধ করা যাচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে পরিবার দিন কাটছে শ্রমিকরা।
দিশেহারা হয়ে বেতন-ভাতার জন্য তারা গত মঙ্গলবার সকালে কারখানার গেইটে অবস্থান নেন। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে বিকেলে পুলিশের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন। আজ বুধবার সকালেও তাদের বেতন দেওয়ার কোন প্রস্তুতি না থাকায় তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ফের সড়ক অবরোধ করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে ১০-১২ জন আহত হয়েছে।
স্টাইল ক্রাফট পোশাক কারখানায় সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, বকেয়া পরিশোধের জন্য কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বার বার বলা হলো তিনি কর্ণপাত করছেন না। লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক, মেট্রোপলিটন পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরের জানানো হয়েছে, তারাও কেউ এগিয়ে আসেনি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর সমীর চন্দ্র সূত্রধর জানান, শ্রমিকরা দ্বিতীয় দিনেরমত সকাল ৮টা থেকে কারখানার সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। অবরোধের কারণে সড়কের উভয়দিকে চলাচলকারী যানবাহন আটকা পড়ে যায়। কারখানার মালিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টার করা হচ্ছে। উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার জাকির হাসান জানান, কারখানা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চলতি মাসের ১৮-১৯ তারিখে বেতন দেয়ার কথা জানিয়েছে। পরে মালিকের ধার্যকৃত দিন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানানো হলে তারা না মেনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে।