নারায়ণগঞ্জ বন্দর ২১ নং ওয়ার্ডের ছালেহনগর এলাকার মৃত আব্দুল আজিজ তোতা মিয়ার স্ত্রী মমতাজ বেগম। মমতাজ বেগমের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তাদের মধ্যে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ফ্রান্সপ্রবাসী। বড় ছেলে মমতাজ আহমেদ মতি ও মেজো ছেলে ইমতিয়াজ আলীসহ দুই মেয়ে রানু ও রোজি ফ্রান্সে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আর ছোট ছেলে বাবর আলী রজ্জব দেশেই থাকেন। তিন বছর আগে আব্দুল আজিজ মিয়া মারা গেলে মমতাজ বেগমের ওপর চালু হয় নির্দয় হৃদয়বিদারক নানারকম নির্যাতন।
মমতাজ বেগমের অভিযোগ, ছোট ছেলে রজ্জব তার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রুপালি আবাসিক এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করছেন। গত ঈদের আগে তাঁকে পাগল সাজিয়ে রিহ্যাবে ভর্তি করান। কিন্তু জানতে পেরে প্রবাসী ছেলে তাঁকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন।
মমতাজ বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার কাছ থেকে ছোট ছেলে মাসিক খরচ দিবে বলে নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। আমি ডিপিএস ভেঙে এই টাকাগুলো ওকে দেই। পরবর্তীতে আমি আমার ভরণপোষণের জন্য উক্ত টাকা চাইলে আমার ওপর অমানুষিক ও অমানবিক নির্যাতন চালায় রজ্জব। লোকলজ্জার ভয়ে অনেক দিন আমি চুপ থেকেছি। পরে বন্দর থানায় অভিযোগ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাবর মাসখানেক আগে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে টয়লেটে আটকে রাখে। পরে রাতের বেলায় গোপনে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিকল বাঁধা অবস্থায় ঢাকা শ্যামলী এলাকায় অবস্থিত সেফ হাউস নামের রিহ্যাব সেন্টারে পাগল সাজিয়ে রেখে আসে। আমার বড় ছেলে প্রবাসে থেকেই আমাকে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।’
এই বিষয়ে মমতাজ বেগমের ছোট ছেলে রজ্জবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মাকে আমি নির্যাতন করেছি না কি করেছি তা আমি বুঝবো। এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বন্দর থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘পূর্বে অভিযোগ করেছে কি না সেটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। বেশ কিছুদিন আগে ছোট ছেলে তার মাকে রিহ্যাবে ভর্তি করিয়েছিল। আবার বড় ছেলের নির্দেশনায় ছোট ছেলেই রিহ্যাব থেকে নিয়ে আসে। বর্তমানে সেই মা স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। তবে আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে।’