সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে টানা বর্ষণে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলার চানপুর এলাকায় বিলীন হয়ে গেছে কমপক্ষে ২০টি পরিবারের ভিটেমাটি ও বাড়িঘর।
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে চানপুর গ্রামের সামসু মিয়া, ধন মিয়া, হাসু মিয়া, ছিদ্দিক মিয়া, মুরশিদ মিয়াসহ ২০টি পরিবারের ভিটেমাটি ও বাড়িঘর ধলাই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে ৩ বছরে ভাঙনে অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো গ্রামের ১৯০টি পরিবার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর আলম জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে প্রথম ভাঙন দেখা দিয়েছিল ২০১৭ সালে।
২০১৯ সালে ভাঙ্গনের চানপুর গ্রামের শাহাবুদ্দীন মিয়া, আলতু মিয়া, বিছন আলী, হোসেন মিয়া, হযরত আলী, নজরুল ইসলাম, হাসেন আলী এবং ২০২০ সালে ভাঙ্গনের নুরুল আমিন, মওলা মিয়া, আনোয়ার বেগম, এরশাদ মিয়া, ধন মিয়া, মুর্শিদ মিয়া, হোসেন মিয়া, কাশেম মিয়া, সামসু মিয়া, রইছ উল্লাহসহ সতেরটি পরিবারের ভিটেমাটি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই ভাঙন রোধ করতে না পারলে অচিরেই হারিয়ে যাবে চাঁদপুর গ্রামটি। বিলীন হয়ে যাবে। ঝুঁকি নিয়ে ১৯০টি পরিবার বসবাস করছেন এখানে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সামসু মিয়া, ধন মিয়া, হাসু মিয়া ও আনোয়ারা বেগম জানান, নদীর ভাঙনে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বসতবাড়ি সব বিলীন হয়েছে। ভাঙনের যে গতি তাতে ঝুঁকিপূর্ণ চানপুর গ্রামটি ধলাই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন আচার্য বলেন, ভাঙনরোধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামটিকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে চিঠি পাঠিয়েছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা করা হচ্ছে।
বুধবার ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত চানপুর নদী ভাঙ্গনে বিলীন কয়েকটি পরিবার ও পানিবন্দি রাধানগর গ্রামসহ ৩০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিআইও বিদ্যুৎ কান্তি দাস, ইসলামপুর পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, পূর্ব ইসলামপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. বাবুল মিয়া প্রমুখ।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। চানপুর গ্রামে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জমিসহ দুর্যোগ সহনীয় ঘর দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।