ঢালিউড সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নায়িকার করা অভিযোগ লিখিত আকারে গ্রহণ করেছে পুলিশ। মামলা হয়নি এখনও।
সোমবার সকালে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পরীমনি রূপনগর থানা ও সাভার থানায় ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি যেহেতু সাভার থানার অন্তর্গত সেহেতু রুপনগরের অভিযোগটি আমরা সাভারে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।
এর আগে রোববার প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান পরীমনি। পরে ঢাকার বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমনি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
‘এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদের পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনার বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!’
পরীমনি আরও লেখেন, ‘আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারি করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!’
পরীমনি আবেগী ওই স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, ‘আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার। আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’
এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন পরীমনি।
তিনি দুজনের নাম প্রকাশ করে জানান, তাদের একজন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাছির ইউ মাহমুদ এবং অন্যজন তার (পরীমণি) কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী।