রাজধানীর কলাবাগান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সোমবার (৩১ মে) বিকেলে ডিবি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই ফ্ল্যাটে সাবলেটে থাকা এক শিক্ষার্থী, তার এক বন্ধু, বাড়ির দারোয়ান রমজান ও কাজের একজন মেয়েকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে।’
ডিবি সূত্র জানায়, ডা. সাবিরা দুটি বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম স্বামী চিকিৎসক ছিলেন। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে সাবিরা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সাবিরার দ্বিতীয় স্বামী সামসুদ্দিন আজাদ একটি বেসরকারি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও তার বনিবনা ছিল না। সাবিরার আগের স্বামীর ঘরে ২১ বছরের এক ছেলে এবং দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে ১০ বছরের এক মেয়ে রয়েছে।
সাবিরার মামাতো ভাই মো. রেজাউল হাসান বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। বিষয়টিকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করার জন্য আগুনের ঘটনা সাজানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনো কাউকে সন্দেহ করছি না। তদন্তের পর পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।’
নিহত চিকিৎসকের খালাতো বোন জাকিয়া খন্দকার মমি বলেন, ‘সে আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছে। তার স্বামী সাবেক ব্যাংকার। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
এর আগে সোমবার দুপুরে কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেন ভবনের নিজ ঘর থেকে সাবিরার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন।
তখন ডিসি আজিমুল হক বলেছিলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ওই বাড়িতে পৌঁছেছে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন।’
কবির হাসান নামে নিহতের এক আত্মীয় জানান, ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপি এই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে গ্রিন রোডে তাদের নানির বাসায় থাকেন। তার স্বামী শামসুর আজাদ একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করতেন। তিনি থাকেন শান্তিনগরে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ওই ভবনের তিন কক্ষের একটি ফ্ল্যাটের এক রুমে সাবিরা একাই থাকতেন। আর বাকি দুটি রুম তিনি সাবলেট দিয়েছিলেন।
বাড়ির মালিক মাহবুব ইসলাম বলেন, ‘সাবলেট দেয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। মরদেহ উদ্ধারের পর জানতে পারি, বাকি দুটি কক্ষ তিনি অন্যজনের কাছে ভাড়া দিয়েছিলেন।’