কক্সবাজারে খাদ্যসংকটে একের পর এক ঘোড়ার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সোমবার তিন সদস্যবিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কক্সবাজার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নেবু লাল দত্তকে প্রধান করে তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— কক্সবাজার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা ডা. মিজবাহ উদ্দিন কুতুবী ও ডা. এহসানুল হক।
সোমবার কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. অসীম বরণ সেন জানান, খাদ্যসংকটে পড়ে ঘোড়া মারা যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এর পরও বিভিন্ন মিডিয়ায় খবরটি আসার পর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লকডাউনের পর থেকে দ্বিতীয় দফা ঘোড়া মালিকদের ঘোড়ার জন্য ভুসি ও প্রয়োজনীয় খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু খাদ্য অভাবে মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আমার অফিস।
তাই ওই তদন্ত কমিটি খাদ্যসংকট আছে কিনা, কতটি ঘোড়ার মৃত্যু হয়েছে এবং অসুস্থ কতটি ঘোড়া সব দিক অনুসন্ধান করবে।
অন্যদিকে খাদ্যসংকটে ঘোড়ার মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ১৩ জনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন।
রোবাবর বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট ও বেলার নিযুক্ত আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীর স্বাক্ষরিত ওই লিগ্যাল নোটিশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সভাপতি, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার, কক্সবাজার পৌর মেয়র, কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারী সংকটকালীন পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কক্সবাজারে বছরব্যাপী আর্থিক জোগানের উৎস এ ঘোড়া খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশের দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী খাবারের অভাবে দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে সৈকতে পর্যটকদের বিনোদন দেওয়ার কার্যক্রমে ব্যবহৃত হচ্ছে।
খাদ্যের অভাবে ঘোড়াগুলো রাস্তার পাশে ফেলা প্লাস্টিক বা পলিথিন বর্জ্য খেয়ে ফেলছে। যার কারণে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার শিকার হচ্ছে। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো প্রাণীকে প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রদান না করা এবং অসুস্থ অবস্থায় লোকালয়ে মুক্ত করে দেওয়া প্রাণীর প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুর আচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং তা দণ্ডনীয় অপরাধ।