নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতাদের আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি খাদ্য, পানি, জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করাসহ পিফোরজি-কে (পার্টনারিং ফর গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড দ্য গ্লোবাল গোলস ২০৩০) তিনটি পরামর্শ দেন।
রবিবার (৩০ মে) পিফোরজি’র সিউল সম্মেলনে আগে ধারণকৃত এক ভিডিও বার্তায় দেওয়া বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
‘ইনক্লুসিভ গ্রিন রিকভারি টুওয়ার্ডস কার্বন নিউট্রালিটি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিফোরজি’র দুদিনব্যাপী এই সম্মেলন।
তিনটি পরামর্শের মধ্যে প্রথমটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পিফোরজি’র পাঁচটি মূল ক্ষেত্র— খাদ্য, পানি, জ্বালানি, শহর এবং সার্কুলার অর্থনীতিতে আরও বেশি ফিন্যান্সিয়ার, বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক এবং সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করতে এর কর্মভিত্তিক পদ্ধতির বিষয়ে আরও বেশি প্রচারণা চালানো এবং সেরা অনুশীলনগুলো বিনিময় করা প্রয়োজন।
সবুজ প্রবৃদ্ধি এবং ২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় পরামর্শটি হলো—এ লক্ষ্য অর্জনে সমাজের সামগ্রিক পদ্ধতির পাশাপাশি একটি বৈশ্বিক মনোভাব প্রয়োজন।
তৃতীয় পরামর্শে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুবজতর ভবিষ্যতের জন্য পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতাদের আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার দরকার।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের স্থানীয়ভাবে অভিযোজন কার্যক্রম বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পানি বাংলাদেশের অত্যন্ত মূল্যমান সম্পদ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পানির যথাযথ ব্যবহার এবং সংরক্ষণে আমরা একশ’ বছর মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করছি।’
বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ, যারা নিজস্ব সম্পদ দিয়ে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজন ও প্রশমন ব্যবস্থায় আমরা প্রতি বছর ৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করছি।’
পিফোরজি’র সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ‘স্বল্প কার্বন উন্নয়ন পন্থা’ অনুসরণ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ‘ন্যাশনাল সোলার এনার্জি অ্যাকশন প্ল্যান ২০২১-৪১’ অনুমান করছে ২০৪১ সালে আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ৪০ গিগা ওয়াটে দাঁড়াবে।’’
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এবং টেকসই ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে ২০১৭ সালে পিফোরজি বৈশ্বিক উদ্যোগটি শুরু হয়।
উল্লেখ্য, এই নেটওয়ার্কে বাংলাদেশ, চিলি, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, রিপাবলিক অব কোরিয়া, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভিয়েতনাম—এই ১২টি দেশ আছে। এছাড়া ডব্লিউআরআই, ডব্লিউএএফ, আইএফসি, জিজিজিআই এবং সি ৪০ সংগঠন এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।