মুমিনের সব কাজই ইবাদত; যদি তা হয় আল্লাহর হুকুম এবং রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক। একজন মানুষের জন্য নামাজ, রোজা যেমন ইবাদত, তেমনি সংসার করাও ইবাদত। পরিবারের লোকদের জন্য খরচ করাও ইবাদত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সওয়াবের আশায় কোনো মুসলমান যখন তার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করে, তা তার সদকা হিসেবে গণ্য হয়। (মুসলিম : ১২/১৪, হাদিস : ১০০২)
পরিবারের জন্য খরচ করলে মহান আল্লাহ যেমন রিজিকে বরকত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনি পরিবারের জন্য উপার্জনরত ব্যক্তিকেও তিনি দিয়েছেন মুজাহিদের মর্যাদা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো অথবা রাতে সালাতে দণ্ডায়মান এবং দিনে সিয়ামকারীর মতো। (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৩)
কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবারের লোকদের স্বাবলম্বী করাকে সদকা করার চেয়েও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সদকার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর মুখে ভালোবেসে তুলে দেওয়া একলোকমা খাবারকেও। সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার শুশ্রূষার জন্য আসেন। আমি বললাম, আমার তো সম্পদ আছে। সেগুলো আমি অসিয়ত করে যাই? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করতে পারো। আর এক-তৃতীয়াংশই তো বেশি। ওয়ারিশদের মানুষের কাছে মুখাপেক্ষী অবস্থায় (মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে ফিরবে) ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে তাদের বিত্তবান অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য সদকা হবে; এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দেবে, সেটাও। সম্ভবত আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৪)