রাজধানীর গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার কুমিল্লার বাসিন্দা কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া (২১) হত্যার বিচার চেয়েছেন সরকারদলীয় সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি ওই দাবি জানান।
কুমিল্লা টাউন হলের সামনের সড়কে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন হয়। এতে সাংসদের অনুসারীরা অংশ নেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস) আসনের সাংসদ ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের সাংসদ আ ক ম বাহাউদ্দিন বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই। তবে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, সেটি তদন্ত করে তাঁকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। যদি এই ঘটনার সঠিক বিচার না হয়, তাহলে কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে আমি রাস্তায় নামব।’
মানববন্ধনে অংশ নেন আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক জি এস সহিদ, আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুর রহমান, কুমিল্লা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক তাহসীন বাহার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান ও মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবদুল আজিজ সিহানুক।
গত ২৬ এপ্রিল কুমিল্লা শহরের উজিরদিঘির এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমানের ছোট মেয়ে মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মোসারাতের বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ওই রাতেই একটি মামলা করেন।
বিচার চেয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন
মুনিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাপ্রবাহে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডশেন (এমএসএফ)। মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মুনিয়ার মৃত্যু বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র থেকে পরিবেশিত তথ্যে প্রচুর অস্বচ্ছতা থাকায় সংগঠনটি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সে বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। এমএসএফ মনে করে, মুনিয়ার অপমৃত্যু ঘিরে তথ্যপ্রবাহ ক্রমেই অস্বচ্ছ করে তোলা হচ্ছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, অভিযুক্ত উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করেন। তাই প্রশ্ন উত্থাপন করা অযৌক্তিক হবে না যে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না কেন?
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কিছু গণমাধ্যমে মুনিয়ার অপমৃত্যুর সুষ্ঠু বিচারের ওপর জোর না দিয়ে নানাভাবে তাঁর চরিত্র হনন করা হচ্ছে। এটি পক্ষান্তরে মৃত্যুর জন্য তাঁকেই দোষারোপ করার প্রবণতা, যা গ্রহণযোগ্য নয়। মুনিয়ার মৃত্যুকে অন্য দিকে প্রভাবিত করার জন্য এমনটি করা হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখা দরকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুনিয়ার ডায়েরি ও অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যাদি প্রকাশ করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকার পরিপন্থী। সংগঠনটি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করে।