করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঈদের আগ মুহূর্তে সরকারের ঘোষিত লকডাউন শিথিল করে দোকানপাট ও মার্কেট খুলে দেওয়ায় মানুষের চলাচল বাড়ছে। আগের মতো পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে কড়াকড়ি নিরাপত্তা নেই। প্রয়োজন হলে কিছু মোটরসাইকেল, রিকশা ও প্রাইভেটকার আটকিয়ে জিজ্ঞেস করছে পুলিশ। তবে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আগের মতো দায়িত্ব পালনের মনোবল নেই। এখন মুভমেন্ট পাস চেক করতে দেখা যাচ্ছে না পুলিশকে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দুদফা শেষে তৃতীয় দফায় লকডাউনের মেয়াদ ৫ মে পর্যন্ত বেড়েছে। সরেজমিন বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সাত মসজিদ রোড, মিরপুর রোড, এলিফ্যান্ট রোড, বকশি বাজার মোড় ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি চেকপোস্টেই নীরব ভূমিকায় রয়েছে পুলিশ। ধানমন্ডির শংকরে চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিই চোখে পড়েনি। আবাহনী মাঠের সামনের চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা থাকলেও রয়েছেন নীরব ভূমিকায়।
সিটি কলেজের সামনের চেকপোস্টে শুধুমাত্র দুজন পুলিশ সদস্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। রাসেল স্কয়ারের চেকপোস্ট আর নেই। শুরুর দিকে আলোচনায় থাকা এলিফ্যান্ট রোডের চেকপোস্টটিও যেন ঠান্ডা হয়ে গেছে। বকশিবাজার মোড়েও দেখা গেছে একই চিত্র।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রথম দিকে যে ধরনের চলাচলে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নজর রাখা হয়েছিল এখন কিছুটা শিথিলতা চলে এসেছে। কারণ থাক বা না থাক, মানুষ রাস্তায় বের হবেই। অনেকে বুঝেনই না মুভমেন্ট পাস কী। আবার যারা বুঝেন, তাদের অনেকে নেন না। উল্টো আমাদের সঙ্গে তর্ক করেন।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শাহেনুর বেগম বলেন, অফিসের প্রয়োজনেই বাসা থেকে বের হতে হয়। শুরুর দিকে মুভমেন্ট পাস নিয়েই বাসা থেকে বের হতাম। বেশ কয়েকদিন মুভমেন্ট পাস নিয়েছি, পুলিশ রাস্তায় চেকও করেছে। কিন্তু কয়েকদিন ধরে পুলিশ আর কিছু বলছে না। আমি প্রতিদিনই মোহাম্মদপুর থেকে এলিফ্যান্ট রোডে যাই। সেক্ষেত্রে শংকর, সিটি কলেজের সামনে এবং এলিফ্যান্ট রোডের চেকপোস্ট অতিক্রম করতে হয়। আগে সব জায়গায় দাঁড়াতে হতো। এখন আর দাঁড়াতে হয় না। সবাই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।
ট্রাফিক বিভাগের ধানমন্ডি জোনের এসি জাহিদ আহসান বলেন, যেহেতু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এখনো লকডাউন চলমান, সেহেতু আমাদের চেকপোস্ট এখনও কার্যকর আছে। রাস্তায় গাড়ির চাপ এখন অতিরিক্ত। পিক আওয়ারে যদি সবগুলো গাড়ি একসঙ্গে চেক করতে যাই, তাহলে রাস্তায় মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যাবে। যার ফলে ওই সময় যাদেরকে দেখে মনে হচ্ছে যে জরুরি প্রয়োজনে বের হননি, তাদেরকে আমরা শুধু চেক করছি।
ট্রাফিক বিভাগের রমনা জোনের এসি মো. রেফাতুল ইসলাম বলেন, রোববার থেকে রাস্তায় গাড়ির তীব্র চাপ। চেকপোস্টগুলোতে চেক করে কুলিয়ে উঠতে পারছি না। সব গাড়ি যদি চেক করতে যাই, তাহলে রাস্তায় চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়বে।